আর একদিন পরই বাংলার ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। আর তার প্রাক্কালে চন্দননগরের সঙ্গে দেবী হৈমন্তিকার আরাধনায় মেতে উঠেছে গ্রামবাংলার মানুষজন। আজ, সোমবার মহানবমী। তাই দিকে দিকে চলেছে শক্তিস্বরূপা জগদ্ধাত্রীর আরাধনা। যা নিয়ে ব্যস্ত স্বয়ং তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী বেচারাম মান্না। তবে জগদ্ধাত্রী পুজো সেরে সিঙ্গুরের ভূমিপুত্র তথা বিধায়ক বেচারাম আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় আন্দোলন নিয়ে কার্যত জুনিয়র ডাক্তারদের কাঠগড়ায় তুলেছেন। মুখে জুনিয়র ডাক্তারদের নাম না নিলেও যা বলেছেন তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
আজ জগদ্ধাত্রী পুজোর নবমী উপলক্ষ্যে সিঙ্গুরের রতনপুরে উদয় সংঘ ক্লাবের ৫০তম বর্ষের জগদ্ধাত্রী পুজোয় এদিন কুমারী পুজো অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে ছেলে দেবদূত মান্নার মন্ত্র উচ্চারণে কুমারী পুজো করলেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। সংকল্প করে অঞ্জলি দিলেন কুমারীর চরণযুগলে। কুমারী পুজোর প্রথমে রজনীগন্ধা, বেলপাতা,জবার মালা পরিয়ে দেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। তারপর শুরু হয় পুজো। এই পুজো শেষ করেই তোপ দাগেন তিনি আরজি কর হাসপাতাল ইস্যুতে। বিপ্লবের ভাবমূর্তিকে সামনে রেখে অন্যত্র গিয়ে উৎসবে মেতে উঠেছেন বলে অভিযোগ করেন মন্ত্রী। আর এগুলি করেছে জুনিয়র ডাক্তাররাই বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে মহারাষ্ট্রে মিথ্যে প্রচার করা হচ্ছে’, বাগডোগরায় নেমে তোপ মমতার
আরজি কর হাসপাতাল ইস্যুতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। রাত দখল, ভোর দখল, কর্মবিরতি, আমরণ অনশন, দ্রোহের কার্নিভাল–সহ অনেক কিছুই করেছেন তাঁরা। আবার তাঁরাই লুকিয়ে দুর্গাপুজো মেতে উঠেছেন। এমন ঘটনাও দেখেছেন মন্ত্রী বলে দাবি করলেন। আজ কুমারীর চরণে বসে ছেলের মন্ত্র উচ্চারণে পুষ্পাঞ্জলি দেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না এবং বিধায়ক করবী মান্না। পুজো শেষে কুমারীকে মিষ্টান্ন খাইয়ে প্রণাম করেন মন্ত্রী এবং বিধায়ক। পুজোর পরেই বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন বেচারাম মান্না। তিনি বলেন, ‘গ্রামে বিপ্লব করে, উত্সবে থাকব না বলে অনেকেই শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দুর্গাপুজোর প্যান্ডেলে বসেছে এবং নেচেছে। সেটাও দেখেছি।’
উপনির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্যের মন্ত্রীর এমন বক্তব্য বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। কারণ তিনি কারও নাম বলেননি। শুধু নানা ঘটনার তিনি সাক্ষী সে কথা উল্লেখ করেছেন। এই ঘটনা জুনিয়র ডাক্তাররাই ঘটিয়েছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। কারণ বহু জুনিয়র ডাক্তার কলকাতা শহরের নানা সরকারি হাসপাতালে কাজ করলেও বাড়ি গ্রামে। তাই এখানে এসে তাঁরা কেমন করে ছিলেন সেটা কেউ জানেন না। তাই বেচারাম মান্নার কথায়, ‘অনেকেই বলেছিল উৎসবে সামিল হবো না। দুর্গাপুজোর প্যান্ডেলের পাশে আমরা তাঁদের চিকেন ললিপপ খেতে দেখেছি। আরজি কর হাসপাতালের ওই ঘটনা মর্মান্তিক। ক্ষমার অযোগ্য। আমরাও চাই দ্রুত বিচার হোক। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে বিশৃঙ্খলা করা হয়েছে সেটা মানুষ বরদাস্ত করবে না।’