পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে আম–আদমির ক্ষোভের আঁচ পাচ্ছেন রাজ্যের নেতা–মন্ত্রীরা। নদিয়ার চাকদা ব্লকের ঘেটুগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের সহিসপুরে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখান রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। পুলিশের সামনেই তাঁর গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় নিজের দলেরই ক্ষুব্ধ নেতার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। আবার মুর্শিদাবাদের বড়ঞা ব্লকের শ্রীহট্টি গ্রামের বাসিন্দারা বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান।
ঠিক কী অভিযোগ গ্রামবাসীদের? স্থানীয় সূত্রে খবর, বার্ধক্য ভাতা এবং বিধবা ভাতা না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন গ্রামবাসীরা। তখন মন্ত্রীর কনভয়ের একটি গাড়িতে থাকা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পরেশ ঘোষ বিক্ষোভকারী জনতাকে গালিগালাজ করেন। তবে পরক্ষণেই ভুলের জন্য ক্ষমা চাইলে ও সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলে শান্ত হন মানুষজন। তবে এই পরিস্থিতির মাঝে সেখানে আসেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তখন তাঁকে ঘেরাও করে চিৎকার শুরু করেন গ্রামবাসীরা। মন্ত্রী তাঁদের শান্ত হতে বলে সকলের কথা মন দিয়ে শোনেন ও সুরাহার আশ্বাস দেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রায় আধ ঘণ্টা লেগে যায়। হাতজোড় করে ক্ষমা চান তিনি। তারপর গ্রামবাসীরা রাস্তা ছেড়ে দিলে গাড়িতে উঠে মন্ত্রী চলে যান।
কে, কি বলছে ঘটনা নিয়ে? এই বিক্ষোভের মুখে পড়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া এবং না হওয়া কাজ করে দিতে উদ্যোগ নেন। এই বিষয়ে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘আমার দলের কোনও কর্মীর ভুলের জন্য ক্ষমা চাইতে কুন্ঠা বোধ করি না। উপপ্রধানের সঙ্গে আমি কথা বলব এবং তাঁকে সবার কাছে যেতে বলব। আপনাদের মধ্যে যাঁরা ঘর পাননি, তাঁরা একটি তালিকা তৈরি করে আমার কাছে পাঠিয়ে দেবেন। উপপ্রধান কেন এমন করলেন, তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হবে। ক্ষমা চাওয়াটা মহৎ গুণের পরিচয়।’ এই ঘটনা নিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘মানুষের অভাব–অভিযোগ শোনার জন্যই তো এই কর্মসূচি। কোনও বিক্ষোভ নয়। মানুষের কী প্রয়োজন, তা জানাতে এসেছিলাম। যে রাস্তা দু’টি ঢালাইয়ের দাবি উঠেছে, সেগুলি সেচ দফতরের হাতে রয়েছে। কথা বলে জানাব। আর এসব নিয়ে বিরোধীদের পুলকিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।’
আর কী জানা যাচ্ছে? মন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে শান্ত হন গ্রামবাসীরা এবং পরে ৬৫টি পরিবার তাঁদের নামের তালিকা মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেন। এখানে জনসভা করতে এসে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমজনতার কাছে জানতে চেয়েছিলেন এলাকার পঞ্চায়েত প্রধানদের কাছে কাজ পান কি না, নেতারা কথা শোনেন কি না। কিন্তু গলায় ‘না’ শুনেছিলেন তিনি। এমনকী পূর্ব মেদিনীপুর এবং নদিয়ার পঞ্চায়েত প্রধানদের বরখাস্ত করেছিলেন তিনি।