আবার বেলাগাম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি। একের পর এক কুরুচিকর আক্রমণ করার জেরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলায়। বিরোধীদের গণপিটুনির নিদান থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর বাপবাপন্ত করতে শোনা গেল তাঁর কণ্ঠে। মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আবদুর রহিম বক্সির মন্তব্য নিয়ে এখন বিতর্কের ঝড় উঠেছে। এবার মালতীপুরের বিধায়ক আবদুর রহিম বক্সি যখন গণপিটুণির নিদান দিলেন তখন তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের ‘ডান্ডা মেরে ঠান্ডা’ করার হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সুতরাং রবিবাসরীয় দুপুরে সরগরম হয়ে উঠল রাজ্য–রাজনীতি। এই নিয়ে জোর চর্চা চলছে।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় মালদার চাঁচল সদর এলাকায় জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি মশাল মিছিল এবং ধিক্কার সভা করা হয়। মূলত এই সভার ইস্যু ছিল আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত ফাঁসির দাবি, বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তাই তাঁর পদত্যাগ দাবি করা হয়। পাঞ্চালি কলেজ মাঠ থেকে মিছিল শুরু হওয়ার পর সমগ্র চাঁচল পরিক্রমা করে তরলতলা মোড়ে এসে শেষ হয়। সেখানেই হয় ধিক্কার সভা। আর তখনই সুর চড়ান মালতীপুরের বিধায়ক। তবে দু’জন (আবদুর রহিম বক্সি ও সুকান্ত মজুমদার) সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাজারের সাইনবোর্ডে জায়গা পেয়েছে উর্দু ভাষা, ফিরহাদকে কড়া ভাষায় নিশানা শুভেন্দুর
অন্যদিকে কদিন আগেই ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু হয় মালদার পরিযাযী শ্রমিক মতিউর রহমানের। এমনকী আরও বেশ কয়েকটি এরকম ঘটনা ঘটেছে। তবে সেটা ভিন্ন জেলায়। আর অভিযোগ, মিথ্যে সন্দেহে তাঁকে গণপিটুনি দিয়ে মারা হয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্যে। ওই প্রসঙ্গ টেনে এবার আবদুর রহিম বক্সি বলেন, ‘এরপরে বাংলার একজন পরিযায়ী শ্রমিককেও পিটিয়ে মারা হলে বাংলাতেও বিরোধী দলের নেতাদের গণপিটুনি দেওয়া হবে।’ এই নিদান যখন দেওয়া হচ্ছিল তখন উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি, জেলার চেয়ারম্যান সমর মুখোপাধ্যায়, দুই প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন এবং সাবিনা ইয়াসমিন ও স্থানীয় বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ।
এছাড়া মঞ্চে ছিলেন মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের স্ত্রী এবং নাবালক সন্তানরা। সেখান থেকেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবদুর রহিম বক্সির হুঁশিয়ারি, ‘দেশটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাবার নয়। যদি বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা না থাকে, এই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে যদি বিজেপি–কংগ্রেস–সিপিএম মোমবাতি মিছিল না করে, যেভাবে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে করেছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের বিজেপি শাসিত রাজ্যে গণপিটুনি দিয়ে মারা হচ্ছে। এখানেও বিজেপি–সিপিএমের সঙ্গে সেটা করা হোক।’ আর বাঁকুড়ায় দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নিদান, ‘মার খেয়ে কাঁদতে কাঁদতে আসবেন না। ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করে তবে আসুন। বাকিটা আমি বুঝে নেব।’