রাজনৈতিকভাবে তারা একে অপরের শত্রু। একে অপরের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি নির্বাচনেও লড়েছেন। কিন্তু, একটি অনুষ্ঠানে দুই নেতাকে দেখা গেল একই মঞ্চে। শুধু তাই নয়, একে অপরের প্রশংসাও করলেন দুজনেই। বুধবার শঙ্করপুর মৎস্য বন্দর এলাকায় মৎস্যজীবীদের সংগঠনের তরফে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই মঞ্চে তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরির সঙ্গে দেখা গেল বিজেপি নেতা স্বদেশ নায়ককে। এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে অখিল গিরি এবং রাজ্য সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেন বিজেপি নেতা। এই অবহে বিজেপি নেতার দলবদলের জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: গ্রেফতার করতে হবে মন্ত্রী অখিলকে, ফুঁসছেন সরকারি কর্মীরা, ‘মমতার কি সাহস হবে?’
গত বিধানসভা নির্বাচনে অখিল গিরির বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন স্বদেশ নায়ক। তিনি অবশ্য অখিল গিরির কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। এদিন শঙ্করপুর মৎস্য বন্দর এলাকায় স্থানীয় মৎস্যজীবী সংগঠনের অনুষ্ঠানে তাদের দুজনকে একসঙ্গে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।
এদিন মৎস্যজীবীদের জন্য একটি কমিউনিটি হল তৈরির জন্য ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়। তার জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। বিধায়ক অখিল গিরি সেই ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। তিনি বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ওই কাজের জন্য চার লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছেন। পাশাপাশি আরও ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলে এদিন ঘোষণা করেন অখিল গিরি।
প্রসঙ্গত, স্বদেশ হলেন শঙ্করপুর ফিসারম্যান অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র সম্পাদক। তিনি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জানান, কমিউনিটি হল তিনি বিধায়ক থাকার সময় করতে পারেননি। নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে তিনি জানান, কোনও কারণবশত এটা সম্ভব হয়নি। তবে এই কমিউনিটি হল তৈরির বিষয়ে প্রশংসা করে তিনি বলেন, এর জন্য অখিল গিরির কথা অস্বীকার করা যাবে না। তিনি আরও জানান, এইভাবে উন্নয়ন করা হলে তিনি রাজ্য সরকারের পাশে থাকবেন। এদিন এলাকায় একটি গঙ্গা মন্দির তৈরি করারও প্রস্তাব দেন স্বদেশ। এছাড়া সমুদ্র এগিয়ে আসার কারণে বাঁধের জন্য আবেদন জানান।
মন্দিরের বিষয়ে অখিল জানান, ভূমি দফতরের কাছে লিখিত আবেদন জানাতে হবে। আর বাঁধের বিষয়টি নিয়ে তিনি দেখছেন বলেন জানান। পাশাপাশি এ বিষয়ে একটি রূপরেখা তৈরি করার জন্য স্বদেশকে পরামর্শ দিয়েছেন। জানা যাচ্ছে, আগামী এপ্রিলে দিঘায় আসার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই সময় অখিল স্বদেশকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে সিপিএম আমলে রামনগরের বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন স্বদেশ। তবে ২০১১ সালের পর থেকে অখিলের সঙ্গে বেশ কয়েকবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরেও জয়ী হতে পারেননি। গত নির্বাচন লোকসভা নির্বাচনের আগেই স্বদেশের দল বদলের জল্পনা শুরু হয়েছিল। আর এবার বিজেপি নেতার মুখে সরকারের প্রশংসা শোনায় ফের দল বদলের জল্পনা মাথা ছাড়া দিয়ে উঠেছে। তবে এবিষয়ে মন্তব্য করতে চায়নি বিজেপি। তৃণমূল জানিয়েছে, বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলে যে উন্নয়ন সম্ভব তা এখন বুঝতে পারছেন স্বদেশ বাবু।