আরজি কর কাণ্ডের আবহে দীর্ঘ ৪০ দিনেও বেশি কর্মবিরতিতে ছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তবে সম্প্রতি তাঁরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছিলেন। যদিও চিকিৎসকদের ওপর পরপর হামলার ঘটনার আবহে ফের কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আর বিগত এই প্রায় দুই মাস সময় ধরে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের হুমকি দিয়ে গিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক ছোট-বড়-মাঝারি নেতা। তাঁদেরই অন্যতম হলেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তিনি সরাসরি একাধিকবার চিকিৎসকদের ওপর হামলার মতো হুমকি দিয়েছেন। এই আবহে সোমবার আর জি কর মামলার শুনানির দিন তাঁর এই সব বক্তব্য উত্থাপন করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এরই মাঝে আবার হুমায়ুন কবীরকে উলটো করে ঝোলানোর হুমকি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। (আরও পড়ুন: ফের আক্রান্ত জুনিয়র ডাক্তাররা, সাগর দত্তের পুনরাবৃত্তি ন্যাশনাল মেডিক্যালে)
আরও পড়ুন: 'নষ্ট CCTV ফুটেজ, বদল রক্তের নমুনা', আরজি করের সুপ্রিম শুনানির আগে গুরুতর অভিযোগ
হুমায়ুন ইস্যুতে গতকাল শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'উনি সব সময়ই এমন বিতর্কিত কথা বলেন। ইউসুফ পাঠানকে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী করেছিলেন তখনও এইসব কথা বলেছিলেন। শুধুমাত্র বাজার মাত করার জন্য, প্রচারের আলোর জন্য এই সব কথা বলেন। এই সব লোককে কীভাবে উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করতে হয় বিজেপি সরকার এলে করে দেখাব।' প্রসঙ্গত এর আগে শনিবার জুনিয়র চিকিৎসকদের নিয়ে হুমায়ুন বলেছিলেন, 'ওরা যত খুশি মিছিল করুক। এক হাজার লোক নিয়ে মিছিল করলে আমি পাঁচ হাজার লোক নিয়ে মিছিল করব। ওদের মেডিক্যাল কলেজে ঘিরে রেখে দেব। মেডিক্যাল কলেজ ঘেরাও করে রাখব। নেত্রী নিষেধ করলেও শুনব না। আমার বিরুদ্ধে এফআইআর করার হিম্মত কোথা থেকে পায়? আমার আর কিছু পাওয়ার নেই। কিন্তু এরা ডাক্তার? ৫০টা ডাক্তারকে ঘরে ঢোকাতে ২ মিনিট লাগবে। আর প্রশাসনও আমার বিরুদ্ধে কী করে দেখব।'
হুমায়ুনের এহেন হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে আইএমএ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখেছে। তবে হুমায়ুন তারপরও লাগামহীন। তাঁর নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর তিনি ফের মুখ খোলেন। বলেন, 'আইন আমরা তৈরি করি। কোনটা আইনসঙ্গত সেটা ভালো করেই জানি। আমাকে যদি জেলে যেতে হয়, তাহলে ৫০ হাজার লোক নিয়ে জমায়েত করব। অপরাধ না করে যদি শাস্তি পাই, তাহলে ফিরে এসে অপরাধ করতে কুণ্ঠাবোধ করব না।'
উল্লেখ্য, এর কয়েকদিন আগেই চিকিৎসকদের হুমকি দিয়ে এই হুমায়ুনই এক জনসভা থেকে বলেছিলেন, 'আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা দিনের পর দিন কর্মবিরতি পালন করে যাবেন, এই জিনিস আর বরদাস্ত করব না। দিনের পর দিন পরিষেবা বন্ধ করলে প্রতিরোধের অধিকার আমাদেরও আছে, পাবলিক মরছে, তাহলে ডাক্তাররা সুরক্ষিত থাকবেন কেন? ডাক্তারদেরও ঘেরাওয়ের অধিকার সংবিধান আমাদের দিয়েছে।' হুমায়ুনের পরপর এই হুমকির বিষয়টি আজ সুপ্রিম কোর্টে উত্থাপিত হলে রাজ্য সরকার অস্বস্তিতে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।