রাজনৈতিকভাবে ওরা একে অপরের বিরোধী। সব সময় একে অপরকে আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ, কাদা ছোড়াছুড়ি করতে দেখা যায়। সম্প্রতি এসএসসি এবং গরু পাচারকাণ্ড নিয়ে তা আরও প্রকট হয়েছে। তবে স্বাধীনতা দিবসে সেই বিরোধীতা উড়িয়ে এক হয়ে গেল ঘাসফুল এবং কাস্তে হাতুড়ি। সিপিএমের পার্টি অফিসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন তৃণমূল বিধায়ক। এমনই এক বিরল ছবি ধরা পরল পশ্চিম বর্ধমানের পান্ডবেশ্বর বিধানসভার নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিআইএমের কিষান ভবনে। সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।
জানা গিয়েছে, আজ রাস্তা দিয়ে গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক। সেই সময় তাঁর গাড়ি দাঁড় করিয়ে সিপিএম কর্মীরা তাদের পার্টি অফিসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের জন্য বিধায়ককে অনুরোধ করেন। এরপরেই সিপিএম পার্টি অফিসে গিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। এ বিষয়ে তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘আজকের এই শুভ স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে কোনেও ব্যাপারে রাজনৈতিক রং দেওয়া উচিত নয়। আমি যেহেতু এই এলাকার বিধায়ক তাই তাঁরা অনুরোধ করেন এবং সেই মোতাবেক আমি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করি। ওরা আমার ভাইয়ের মতো।’ এপ্রসঙ্গে কিছুটা হলেও রাজনৈতিক রং চড়িয়ে বিধায়ক বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৎকালীন জ্যোতি বসুর সরকার রাইটার্স বিল্ডিং থেকে চুলের মুঠি ধরে বার করে দিয়েছিল। কিন্তু, ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গঠন করলে তিনি সিপিএম নেতৃত্বকে ফিসফ্রাই খাইয়েছিলেন।’
অন্যদিকে, এ বিষয়ে আজমপুর সিপিএমের নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রাক্তন প্রধান কাঞ্চন মুখার্জি বললেন, ‘মাননীয় বিধায়ক আমাদের ঘরের মানুষ। এ বিষয়ে কোনও রাজনৈতিক রং দেওয়া উচিত নয়। তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও এই স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে আমরা সকলে একত্রিত।’ উল্লেখ্য রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পরে বিজেপির পাশাপাশি জেলায় জেলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে সিপিএম। সেই মুহূর্তে স্বাধীনতা দিবসে এই ছবি নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।