নাগরিক পরিষেবার ব্যর্থতা ও প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগ তুলে দুর্গাপুজো কার্নিভাল বয়কট করলেন রায়গঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। শনিবার বিকেলে কার্নিভাল শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিস্ফোরক পোস্ট করে তিনি জানান, শহরের পরিকাঠামো ও পরিষেবা পরিস্থিতি এতটাই দুর্বল যে, এমন সময়ে উৎসব উদ্যাপনে যোগ দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।
আরও পড়ুন: ‘যা হল তা ঠিক হল না’, বাণিজ্য সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পেয়ে বঞ্চনার অভিযোগ কৃষ্ণের
বিধায়কের অভিযোগ, রায়গঞ্জ পুরসভা ও প্রশাসন শহরের নাগরিক সমস্যাগুলির প্রতি একেবারেই উদাসীন। জলমগ্ন, নোংরা রাস্তাঘাট, অপর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সবই এখন রায়গঞ্জবাসীর নিত্যদিনের দুর্ভোগ। তাঁর দাবি, নগরোন্নয়ন দফতর রায়গঞ্জের উন্নয়নের জন্য দিয়েছে ৭ কোটি টাকা, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর দিয়েছে আরও ১০ কোটি। অথচ শহরের রাস্তাঘাট থেকে ড্রেনেজ কোথাও উন্নতির ছোঁয়া নেই। পুরসভা সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
বিধায়ক আরও লেখেন, যে শহরের মানুষ প্রতিদিন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দিন কাটাচ্ছেন, যেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কোনও উদ্যোগ নেই, সেই শহরের সমস্যাগুলো অগ্রাহ্য করে কার্নিভালে যোগ দেওয়া নাগরিক দায়িত্ববোধের পরিপন্থী। তাঁর এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই রায়গঞ্জ জুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। এদিকে, বিধায়কের অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছেন রায়গঞ্জ পুরসভার প্রশাসক সন্দীপ বিশ্বাস। তাঁর বক্তব্য, হঠাৎ কিছু মনে হলেই না জেনে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দেওয়া কোনও দায়িত্ববান রাজনীতিকের কাজ নয়। কৃষ্ণ কল্যাণীর নেতৃত্বেই উন্নয়নের কাজ হচ্ছে। তিনি যেখানেই নো-অবজেকশন চেয়েছেন, সেখানেই তা মঞ্জুর করা হয়েছে। কাজও চলছে। পাশাপাশি তিনি জানান, বিষয়টি দলের কাছে পাঠানো হয়েছে যা বলার, দলই বলবে।
উল্লেখ্য, শনিবার বিকেল তিনটে থেকেই ভারী বৃষ্টির আশঙ্কায় নির্ধারিত সময়ের আগেই শুরু হয় রায়গঞ্জ পুজো কার্নিভাল। শহরের বিভিন্ন পুজো কমিটির প্রতিযোগিতামূলক শোভাযাত্রা দেখতে ভিড় জমায় হাজারো মানুষ। তবে কৃষ্ণ কল্যাণী সেখানে অনুপস্থিত থাকেন। তাঁর অনুপস্থিতিতেও উপস্থিত ছিলেন জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের শীর্ষ সারির প্রায় সবাই জেলা সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল, কালিয়াগঞ্জের চেয়ারম্যান রামনিবাস সাহা, জেলা পরিষদের সভাধিপতি পম্পা পাল, করণদিঘির বিধায়ক গৌতম পাল, ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেন এবং রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানী।