আজ মহালয়া। পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে সূচনা হয়েছে দেবীপক্ষের। সেখানে মাঝরাতে তৃণমূল কংগ্রেসের রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার কথা জানালেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা নিয়ে আজ, বুধবার সকাল থেকেই সরগরম হয়ে উঠল রাজ্য–রাজনীতি। হঠাৎ এমন কী ঘটল? মাঝরাতে এমন পোস্ট কেন? এসব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মাঝরাতে এমন হুঁশিয়ারি অনেকে দেখেননি। কিন্তু আজ সকাল থেকে তা চর্চায উঠে এসেছে। বিজেপি সংস্রব ত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন এই বিধায়ক। তারপর মাঝরাতে এমন হুঁশিয়ারি চোখ কপালে উঠেছে অনেকে। কবে ছাড়বেন? সেটাও জানতে চান মানুষ।
তবে বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর এই সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট থেকে স্পষ্ট উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসকের উপরে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েই এমন মন্তব্য করেছেন তিনি। দলের সঙ্গে তাঁর কোনও ঝামেলা হয়নি। সেখানে জেলাশাসকের সঙ্গে এমন কী ঘটল? দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে কেন জানালেন না কৃষ্ণ কল্যাণী? এসম প্রশ্ন উঠছে এখন। মাঝরাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় করা পোস্টে রায়গঞ্জের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক লিখেছেন, ‘আমি কৃষ্ণ কল্যাণী, একজন জনপ্রতিনিধি। আর জেলাশাসক জনগণের চাকরি করেন। যদি এই ব্যবস্থার পরিবর্তন না হয়, তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। আমি নিজের মতো করে জনসেবা করায় বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করব।’
আরও পড়ুন: নতুন রোগী কল্যাণ সমিতি গঠন হয়েছে, থাকছে গ্রিভ্যান্স সেলও, বিজ্ঞপ্তি জারি স্বাস্থ্য দফতরের
কৃষ্ণ কল্যাণী রায়গঞ্জে একটা বড় ফ্যাক্টর। তাই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আর জয় পান কৃষ্ণ কল্যাণী। তবে সেখানে বেশিদিন থাকতে পারেননি। তাই সরাসরি আবার তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসেন। আর ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে প্রার্থী হন তিনি। কিন্তু হেরে যান। বিধানসভার উপনির্বাচনে আবার তৃণমূল কংগ্রেসে জেতেন কৃষ্ণ কল্যাণী। সুতরাং এখন আর তিনি বিজেপি বিধায়ক নন। সেখানে রাজনীতি ছাড়ার কথা বলতেই প্রশ্ন উঠছে, এবার কোন দলে যাবেন?
শাসকদলের বিধায়ক হয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে সংঘাত খুব একটা দেখা যায় না। বরং তাঁরা একসঙ্গে কাজ করেন। আর যদি কৃষ্ণ কল্যাণীর সমস্যা হয়েই থাকে তাহলে তিনি তা দলকে জানাতে পারতেন। তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা তেমনটাই মনে করছেন। সেখানে অযথা এমন পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় করে বিরোধীদের পালে হাওয়া দিলেন তিনি বলেও অনেকের মত। কয়েকদিন আগেই উত্তরবঙ্গ সফরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরই কৃষ্ণ কল্যাণী প্রশাসনিক আধিকারিকের উপরে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজনীতি ছাড়ার পর্যন্ত হুমকি দিয়ে দিলেন। কৃষ্ণ কল্যাণী কি কার্যত দলকেই বার্তা দিলেন? প্রশ্ন উঠছে।