গত ১৪ অগস্টের রাতে বেলঘরিয়াতে কয়েক হাজার মানুষের জমায়েত হয়েছিল আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে। গোটা রাজ্যের মতোই সেই রাতের মিছিলের নেতৃত্বে কোনও রাজনৈতিক দল ছিল না। তবে মিছিলে আগতদের অধিকাংশের কথাবার্তা এবং স্লোগানে স্পষ্ট ছিল, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে তাঁরা। এমনটা দেখা গিয়েছে আরও বহু জায়গায়। যাদবপুরের ৮বি-র রাত দখলের জমায়েতে স্লোগান উঠেছিল - 'মমতা তুমি গদি ছাড়ো'। এই সবের মাঝে গতকাল থেকে আবার তৃণমূল পালটা পথে নেমেছে। দাবি সেই এক - 'বিচার চাই'। তবে সুর যেন ভিন্ন। এহেন পরিস্থিতিতে গতকাল বেলঘরিয়াতে প্রতিবাদী মিছিলে সামিল হয়ে আরজি কর কাণ্ডে জনসাধারণের বিক্ষোভ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিধায়ক মদন মিত্র। (আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে মমতার সরকারে অসন্তোষ অভিষেকের, চাইছেন শীর্ষ পর্যায়ে বদল: রিপোর্ট)
আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে ডঃ কুণাল সরকার, সুবর্ণ গোস্বামীকে লালবাজারে তলব পুলিশের
আরও পড়ুন: বারবার বাম-রাম তত্ত্ব মমতার, তবে আরজি কর কাণ্ডে পুলিশেরই জালে 'পার্টির ছেলেরা'
সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে মদনের বক্তব্য, 'আমরা চাই প্রকৃত দোষী শাস্তি পাক। হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রী রাস্তায় নামল। অথচ তারা জানতেই পারল না সিপিএম-বিজেপি-কংগ্রেস ওদের কাঁধে বন্দুক রেখে কী করল। আমি বিরোধীদের বলব ঘোমটাটা সরিয়ে দিন। খ্যামটা নাচছে ঘোমটার পিছনে। রাস্তায় নামুন। বেলঘরিয়ায় আসুন।' এদিকে চিকিৎসকদের কাজে ফেরার আর্জি জানিয়ে মদন বলেন, 'প্রয়োজন পড়লে পা ধুয়ে দেব। জুতোর ফিতে বেঁধে দেব। কিন্তু চিকিৎসকরা যেন ফের কাজে যোগ দেন।' (আরও পড়ুন: গ্রেফতার করা হোক সন্দীপ ঘোষ ও CP বিনীত গোয়েলকে, বিস্ফোরক দাবি খোদ তৃণমূল সাংসদের)
আরও পড়ুন: খেতে বসে গ্রেফতার, জেলে হাসিনা জমানার মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন
এদিকে প্রতিবাদকে 'সমর্থন' করেও আরজি কর কাণ্ডে যেন প্রতিবাদ থামাতে মরিয়া বর্তমান তৃণমূল সরকার। এই আবহে আরজি কর হাসপাতালের আশপাশে জমায়েতের উপরে বিধিনিষেধ জারি করেছে কলকাতা পুলিশ। শনিবার রাতের পুলিশের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে যে আগামী সাতদিন শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়, বেলগাছিয়া-সহ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের আশপাশে ‘বেআইনি’ জমায়েতের (পাঁচজন বা তার বেশি) উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। রবিবার (১৮ অগস্ট) থেকে আগামী ২৪ অগস্ট (শনিবার) পর্যন্ত বা পরবর্তী নির্দেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত সেই বিধিনিষেধ কার্যকর হবে। সেইসময়ের মধ্যে যদি ‘বেআইনি’ জমায়েত করা হয়, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ২২৩ ধারার আওতায় মামলা রুজু করা হবে। যে ধারার আওতায় কারাদণ্ড হতে পারে। গুনতে হতে পারে জরিমানাও। (আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডের জের? বেহালা থেকে দুই বাম নেতাকে লালবাজারে তুলে নিয়ে গেল পুলিশ)
আরও পড়ুন: 'রূপান্তরকামীর বুক টেপা তো দূরের, কাউকে ছোঁয়নি পর্যন্ত RPF', দাবি মেট্রোর
কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের জারি করা সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ ধারার আওতায় প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে সাতদিনের জন্য 'পাঁচজন বা পাঁচজনের বেশি কোনওরকম বেআইনি জমায়েত; লাঠি, কোনও বিপজ্জনক অস্ত্র বহন করা বা কলকাতার সংশ্লিষ্ট এলাকায় জনগণের শান্তি বিঘ্নিত করতে পারে ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারে', এমন কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল।