রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে টাকার পাহাড় উদ্ধার হওয়া নিয়ে জোর চর্চা চলছে। তার মধ্যেই এলাকায় হাজির ৫১ লক্ষ টাকার আধুনিক স্পিড বোট! নিজের বিধায়ক তহবিলের টাকায় এই স্পিড বোট কিনে বিতর্কে জড়িয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মণ্ডল। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিরোধীরা মাঠে নেমে পড়েছে। এই বোট কী কাজে লাগবে সেটা নিয়ে এখন গোটা এলাকায় আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
কেন এমন স্পিড বোট কেনা হল? গোসাবা থেকে সুন্দরবন—এই গোটা এলাকাকে মানুষ দ্বীপাঞ্চল বলেই জানে। শরীর খারাপ হলে বা রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। সেক্ষেত্রে ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্সের প্রয়োজনীয়তার কথা সকলেই মানেন। তাই দেড় বছর আগে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে একটি ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স চালুও করা হয়েছিল। কিন্তু তার জ্বালানির খরচ জোগান দেওয়া যায়নি। ফলে সেটি নোঙর গেড়েছে। সুব্রত মণ্ডলের তহবিলের টাকায় স্পিড বোট এখন এসে গিয়েছে। অত্যাধুনিক এই স্পিড বোট একঘন্টা চললে ৪০ লিটার পেট্রোল লাগবে। যার বাজার দর সাড়ে ৪ হাজার টাকা। আর এটাই নিয়েই এখন চর্চা তুঙ্গে।
কত দাম এই স্পিড বোটের? ২০২১–২২ অর্থবর্ষে এলাকা উন্নয়নের ৬০ লক্ষ টাকার মধ্যে প্রায় ৫১ লক্ষ টাকাই সুব্রত মণ্ডল বোট কিনতে খরচ করেছেন বলে সূত্রের খবর। তবে এটা মানুষের স্বার্থেই কেনা হয়েছে বলে দাবি বিধায়কের। মানুষের শরীর খারাপ থেকে শুরু করে জলপথে বিপদ হলে এই স্পিড বোট কাজে আসবে বলেই মনে করেন বিধায়ক। যদিও বিরোধীরা সমালোচনা করতে ছাড়েননি। গোসাবার এসইউসি নেতা চন্দন মাইতি বলেন, ‘জেটিঘাট থেকে হাসপাতাল এবং দূর থেকে মানুষকে পানীয় জল নিয়ে আসার সমস্যা এখানে রয়েছে। সেখানে বিলাসবহুল বোট কেন কেনা হল? সেটা সত্যিই আমাদের ভাবাচ্ছে।’ বিজেপি নেতা বিকাশ সর্দারের খোঁচা, ‘বিধায়কের শখ হয়েছে। তাই স্পিড বোটে করে নদীবক্ষে ভ্রমণ করবেন।’
ঠিক কী বলছেন বিধায়ক? বিরোধীদেক সমালোচনায় কান দিতে নারাজ বিধায়ক। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই মানুষের সেবা করতেই তিনি কাজ করেছেন বলে তাঁর দাবি। বিধায়ক সুব্রত মণ্ডলের যুক্তি, ‘দ্বীপাঞ্চলে রোগী ও প্রসূতিদের এই স্পিড বোটে করে চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে। কার্যত অ্যাম্বুল্যান্স হিসাবে ব্যবহার করা হবে এই স্পিড বোটকে। এমনকী ভিআইপিরা সুন্দরবনে এলে এই বোটে করে বিভিন্ন দ্বীপে যাতায়াত করতে পারবেন।’