বিভিন্ন প্রশাসনিক সভায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিরুদ্ধে সওয়াল করেছেন। সেখানে কোচবিহারে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীকোন্দল ফের প্রকাশ্যে চলে এলো। সরাসরি দলের কর্মিসভার মঞ্চ থেকে বিধায়ক উদয়ন গুহকে বিষোদ্গার করতে শোনা গেল রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। কোচবিহারের জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। আর তার নাম করেই উদয়ন গুহ বলেন, ‘চালতা গাছ লাগিয়ে ল্যাংড়া আমের আশা করলে তা হয় না।’ যদিও এই নিয়ে রবীন্দ্রনাথ কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
ঠিক কী ঘটেছে কোচবিহারে? রবিবার এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি কর্মিসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানের অনুষ্ঠানের মঞ্চেই রবীন্দ্রনাথকে তুলোধনা করেন উদয়ন। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে চালতা গাছ লাগিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ যদি ভাবেন যে তাতে ল্যাংড়া আম ফলবে, তা কখনই হবে না। আপনি দলের মধ্যে গণ্ডগোল পাকাবেন আর আইএনটিটিইউসি’র নাম করে আলাদা বৈঠক করবেন, সেখানে অন্য নেতাদের আমন্ত্রণ জানাবেন না, আর আপনাকে সব মিটিংয়ে আমন্ত্রণ জানানো হবে! সেটা হবে না। যত বড় নেতাই হই না কেন, সঠিক ব্যবহার না করলে ভোটে কেউই জিততে পারব না।’
রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে বরাবরই সম্পর্কে ফাটল রয়েছে উদয়ন গুহর। এতদিন তা ভিতরে ভিতরে ঠাণ্ডা লড়াই চলছিল। এবার উদয়ন গুহ ব্যাপক ভোটে জিতে বিধায়ক হয়েছেন। তারপরই তা প্রকাশ্যে নিয়ে আসলেন তিনি। এই গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহারের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে দু’টি কেন্দ্রে জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
সম্প্রতি এই গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে ভর্ৎসনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেছিলেন তিনি। সেখানে কোচবিহারে উদয়ন–রবীন্দ্রনাথ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় নতুন মাত্রা নিল জেলা সমীকরণে বলে মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনার পর জেলার সংগঠনেও তার প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।