কদিন আগে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে নালিশ করে বিধায়কদের চিঠি এসেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এবার এই পরিস্থিতি দেখা গেল রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার ক্ষেত্রে। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নালিশের চিঠি গেল মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে। মানস ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, দলের অন্দরে ‘গোষ্ঠী রাজনীতি’ করছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশ এই চিঠি তৃণমূল সুপ্রিমোকে পাঠিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এই চিঠির পর মানস ধমক খেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, এই বিধায়কদের তালিকায় রয়েছেন কেশপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা, দাঁতনের প্রবীণ তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক বিক্রম প্রধান–সহ কয়েকজন। ২০১৬ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে আসা মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া এখানে অনেকের সিনিয়র। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসে আদি–নব্যের মধ্যে আদি নেতারা মানসের বিরুদ্ধে খাপ্পা। নব্যরা মানসকে মেনে নিচ্ছেন দু’একজন ছাড়া বলে সূত্রের খবর। বাংলার রাজনীতিতে গত ৪০ বছর ধরে পরিচিত নাম মানস। তাই বিধায়কদের চিঠিতে কি কাজ হবে? উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: ট্রাফিক পুলিশের সরকারি গাড়ির বিমা আট বছর পুনর্নবীকরণ হয়নি, চক্ষু চড়কগাছ
শিউলি সাহা এবং বিক্রম প্রধান ছাড়াও মানসের বিরুদ্ধে ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। দু’পাতার চিঠিতে মানস ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে গোষ্ঠীবাজি করার অভিযোগ লেখা হয়েছে। সেখানে মানসবাবু এক সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘এমন কোনও বিষয় আমার জানা নেই। আমি দলের কোনও পদেও নেই। একজন কর্মী হিসেবে যে দায়িত্ব পাই, আমি সেটাই পালন করি। দলের নির্দেশ মেনে একজন কর্মী হিসেবে সুজয়ের হয়ে ভোট প্রচার করেছিলাম। তার মধ্যে গোষ্ঠী রাজনীতির অভিযোগ সঠিক নয়।’ মানসের বিরুদ্ধে নিজের লোকেদের ‘পাইয়ে’ দেওয়ার রাজনীতি, ‘স্বজনপোষণ’ এসব অভিযোগ করা হয়েছে। মানসকে ‘গোষ্ঠী রাজনীতি’ করতে চাইছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন অভিযোগকারী বিধায়করা।
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে যাতে প্রভাব না পরে তার জন্যই মুখ্যমন্ত্রীকে পদক্ষেপ করতে হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সেচমন্ত্রীর পাশাপাশি জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রীও মানস ভুঁইয়া। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে আসার কয়েক মাসের মধ্যেই মানস ভুঁইয়াকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর সবং বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হন মানসের স্ত্রী গীতা ভুঁইয়া। আবার ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যসভার সদস্য হওয়া সত্ত্বেও সবং বিধানসভায় মানস ভুঁইয়াকে প্রার্থী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মানস ভুঁইয়া এখন আবার তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের দায়িত্বে আছেন।