টানা ৩৬ ঘণ্টার উদ্বেগ–উৎকণ্ঠা। সেটাই রবিবার হাহাকারে পরিণত হয়েছিল। ইলিশ মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। আর ফেরা হল না আটজন মৎস্যজীবীর। ওই মৎস্যজীবীদের মৃতদেহ উদ্ধার হয় অভিশপ্ত ট্রলারের ভিতর থেকেই। পাদুরী দাস নামে এক মৎস্যজীবী এখনও নিখোঁজ। মারা গিয়েছেন কানাই দাস, বাসুদেব দাস, নিরঞ্জন দাস, জগবন্ধু দাস, নিখিল দাস, শঙ্কর দাস, মুকুন্দ বৈরাগী এবং সৌরভ দাস। এবার কেমন করে এই পরিবারগুলির সংসার চলবে? আজ, সোমবার সকাল থেকে এই প্রশ্নই কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে বাকি সদস্যদের। মৎস্যজীবীর এই মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বজনহারাদের পাশে দাঁড়ালেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে ওই ট্রলারে মোট ১৭জন মৎস্যজীবী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে আটজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও বাকি ৯ জন নিখোঁজ ছিলেন। তাঁদের বেঁচে থাকা নিয়ে সন্দেহ হচ্ছিল। রবিবার দুপুরে ডুবন্ত ট্রলার নামখানার লোথিয়ান দ্বীপের কাছে টেনে আনা হয়। তারপর ট্রলারটিকে সোজা করতেই একে একে আটটি দেহ বেরিয়ে আসে। নৌকায় করে নামখানার হরিপুর খেয়াঘাটে নিয়ে আসা হয় দেহগুলি। সেই শোক নিয়ে আজ যেন পাথর হয়ে গিয়েছেন মৎস্যজীবীদের পরিবারের সদস্যরা। এই আবহে মথুরাপুরের সাংসদ বাপি হালদারের মাধ্যমে মৎস্যজীবীদের পরিবারগুলির হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দিলেন অভিষেক। আজ, সোমবার তাঁদের বাড়িতে গিয়ে সেই আর্থিক সাহায্য দিয়ে এসেছেন বাপি হালদার।
আরও পড়ুন: আলিপুরদুয়ারের চা–বাগানে সন্তান প্রসব মা হাতির, হাঁটতে শেখা পর্যন্ত করছে অপেক্ষা
অন্যদিকে মৃতদেহ উদ্ধারের দিন খেয়াঘাটে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা, মথুরাপুরের সাংসদ বাপি হালদার, সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও এবং অন্যান্যরা। স্থানীয় বাসিন্দারাও প্রচুর সংখ্যায় ভিড় জমিয়েছিলেন। মৎস্যজীবীদের পরিবারের লোকজন দেহ হাতে পেতেই কান্নার রোল ওঠে। যা আজও থামেনি। এদিন মৃত মৎস্যজীবীদের বাড়িতে যান মথরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ বাপি হালদার। তাঁকে কাছে পেয়ে পা জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃত মৎস্যজীবীদের পরিজনরা।
এছাড়া শোকার্ত পরিবারগুলি যাতে কিছুদিন সংসার চালাতে পারেন তার জন্য সাংসদ তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাপি হালদারের মাধ্যমে অর্থ সাহায্য পাঠান। মৎস্যজীবীদের পরিবারের হাতে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তিন লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। প্রশাসনিক স্তরেও মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। শোকের আবহে সাংসদের এই অর্থ সাহায্যে খানিকটা স্বস্তি মিলছে। তবে আপনজনকে হারিয়ে সকলেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।