কয়েকদিন আগে জেলায় কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন তাঁকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। এমনকী তাঁর সরকারি বাংলো পর্যন্ত ঘেরাও করেছিলেন। তার প্রেক্ষিতে কড়া ভাষা ব্যবহার করে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন তিনি। হ্যাঁ, তিনি মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। এবার তাঁর বাড়ি ঘেরাও করার বার্তা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এখন ‘নব জোয়ার’ যাত্রায় পুরুলিয়ায় এসেছেন। এখানে আসার পথে কুড়মিরা তাঁকে বাধা দেন। তারপরই বুধবার পুরুলিয়ার শিমুলিয়ার অধিবেশনে কুড়মি আন্দোলনকারীদের বার্তা দেন,বঞ্চনা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আর পাশে থাকবে তৃণমূল কংগ্রেস।
ঠিক কী বলেছেন অভিষেক? কয়েকদিন ধরে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জায়গায় কুড়মি সমাজের আন্দোলন চলছে। এই খবর যায় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কানে। আর তারপরই বুধবার রাতে পুরুলিয়ায় অভিষেক বলেন, ‘আমাদের সরকার ২০১৭ সালে ক্যাবিনেটে রিজিলিউশন করে পাঠিয়েছিল। কোনও রাজ্য সরকার করেছে? কেউ করেনি। সেখানে পুরুলিয়ায় কুড়মি ভাইদেরকে মিথ্যে প্ররোচনা দিয়ে এদের থেকে ভোট নিয়েছিল। আর এখন সেইসব নেতারা বলছেন কুড়মি ভাইদের জামাকাপড় খুলে দেব।’ এই জামাকাপড় খুলে নেওয়ার কথা বলেছিলেন দিলীপ ঘোষ। যার জন্য ক্ষমা চাইতে হয়েছিল সুকান্ত মজুমদারকে।
ঠিক কী বার্তা দিয়েছেন? এই ঘটনা নিয়ে এখনও তেতে আছে কুড়মি সমাজ। তাই এবার তাঁদের বার্তা দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘আপনারা আন্দোলন করুন। প্রয়োজনে দিলীপ ঘোষের বাড়ি ঘেরাও করুন। শপথ নিন যে একটা বিজেপি নেতাকে পুরুলিয়ায় প্রবেশ করতে দেবেন না। যা সমর্থন লাগবে আমি দেব। যেখানে বলবেন সেই লড়াইয়ে কাঁধ মেলাতে যাব। সমর্থন মানে গায়ে গতরে খাটব। আজকে যদি পুরুলিয়ায় ১১ লক্ষ জব কার্ড হোল্ডার হয় এদের মধ্যে ৩০ শতাংশ হোল্ডার কুড়মিরা হবেন। তিন লক্ষ কুড়মিরা নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এদের জন্য দিল্লিতে আন্দোলন করবেন না?’
ঠিক কী বলছেন দিলীপ ঘোষ? কুড়মিদের দাবি, তাঁদের ভাষাকে স্বীকৃতি দিতে হবে। তাঁদের সম্প্রদায়কে তফসিলি জাতির অন্তর্ভূক্ত করতে হবে–সহ আর কয়েকটি বিষয়। রাজ্য সরকার তাতে সাহায্য করতে প্রস্তুত। কিন্তু কাজটি করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। এই পরিস্থিতিতে দিলীপ ঘোষের বাড়ি ঘেরাওয়ের বার্তা দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারই পাল্টা হিসাবে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমার বাড়ি ঘিরে নিয়েছে ওরা। আমার বাড়ি ঘেরাও করতে কারা ইন্ধন জুগিয়ে ছিল সেটা পরিষ্কার হয়ে গেল। কুড়মিদের কয়েকজন নেতা টিএমসির দালাল। টাকা নিয়ে আন্দোলন করে বিজেপিকে আটকানোর চেষ্টা। পুরুলিয়া থেকে লোক আনা হয়েছিল। মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের কেউ ছিল না। জঙ্গলমহলের মানুষ দিলীপ ঘোষ কেমন জানেন। সেটিংয়ের রাজনীতি বন্ধ করা উচিত।’