ডায়মন্ড হারবারের রবিবাসরীয় সভা থেকে নাম না করে সরাসরি শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ–করা শুভেন্দু কয়েকদিন আগেই নন্দীগ্রামে এক বিজয়া সম্মিলনীতে বলেছিলেন, ‘আমি প্যারাশুটে নামিনি। লিফটেও উঠিনি। সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে উঠেছি।’ সেই ‘প্যারাশুট’ শব্দটিকে ধরে রেখেই এদিন শুভেন্দুকে আক্রমণ করেন অভিষেক। তিনি এদিন বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসে রাতারাতি কেউ নেতা হয়নি। কর্মী হোক বা নেতা— কেউ প্যারাশুটে নামেননি। লিফটেও ওঠেননি।’
শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে এদিন অভিষেক বলেন, ‘লিফটে উঠলে কেউ একটা বিধানসভার সদস্য হয়ে থাকতেন না। কেউ কেউ অনেক কিছু বলে। আমাদের দেশ গণতান্ত্রিক। বলতেই পারেন। আমি প্যারাশুটে নামলে ৩৫টা পদের অধিকারী হতাম। প্যারাশুটে নামলে দক্ষিণ কলকাতায় লড়তাম, যেখানে আমি থাকি। আমি ২০১৪ সালে প্রার্থী হয়েছি এই ডায়মন্ড হারবারের।’
বজবজের মুচিশা হাইস্কুল মাঠে হওয়া এদিনের সভায় অভিষেক বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু রাতারাতি তৈরি হয়নি। একে–ওকে দিয়ে মন্তব্য করিয়ে লাভ হবে না। ৩৪ বছরের তমশাচ্ছন্ন পশ্চিমবঙ্গের সূর্য মমতা।’ অভিষেক এদিন সাবধান করে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে লড়াই করতে এসে ঝলসে যাবেন।’ এর পরই তৃণমূলের যুব নেতা কটাক্ষ করে বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসে রাতারাতি কেউ নেতা হয়নি। দলের কোনও কর্মী বা নেতা— কেউই প্যারাশুটে নামেননি, লিফটেও ওঠেননি।’
একইসঙ্গে এদিন প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রীর নাম উল্লেখ না করে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ করেছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের নাম তৃণমূল কংগ্রেস। আর দল সকলের কাছে মায়ের মতো। তৃণমূল কংগ্রেস সকলের মা। মায়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলে ছেড়ে কথা বলবেন? নিজে উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়ে অন্য দলের হয়ে তাবেদারি তল্পিবাহক হলে ছেড়ে কথা বলবেন? মায়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা সহ্য করা যায় না। একটা বাংলা ছবির সংলাপ আছে, বউ হারালে বউ পাওয়া যায়, মা হারালে পাওয়া যায় না। বিশ্বাসঘাতকতা করলে কড়ায়–গণ্ডায় জবাব দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর এদিনই শুভেন্দু অধিকারী প্রথম সভা করেন মহিষাদলের ছোলাবাড়ি রাজবাড়ি প্রাঙ্গনে। অরাজনৈতিক ব্যানারে হওয়া এই শিবিরে কোনওরকম রাজনৈতিক মন্তব্য করেননি তিনি। তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এই সভা ছিল প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী রণজিৎ বয়ালের স্মরণে।