গত দু’বছর তিনি বিজেপিতে ছিলেন। যদিও তাঁর উত্থান হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসে। একুশের নির্বাচনের পর মোহভঙ্গ হতেই তিনি ফিরে এসেছে পুরনো দলে। কিন্তু ঘরে এসে দেখলেন, ঘর অনেক বদলে গিয়েছে। আর তাঁর অনুপস্থিতির সুযোগে দলে অনেক ‘অ্যাক্সিডেন্টাল’ নেতা তৈরি হয়েছে। যাঁরাই মূলত ‘দুর্নীতি’ করেছেন বলে অভিযোগ তাঁর। একইসঙ্গে এই সাংসদ তুললেন বিস্তর অভিযোগ। হ্যাঁ, তিনি ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং।
ঠিক কী বিস্ফোরক অভিযোগ সাংসদের? উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলে সভা করতে এসেছিলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। সেখানেই তিনি বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন দলেরই কিছু নেতার বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘দু বছর অন্য দলে ছিলাম। তারপর যে ঘরের ছেলে ছিলাম, সেই ঘরে ফিরে এসেছি। তার মাঝে দলে অনেক অ্যাক্সিডেন্টাল নেতা তৈরি হয়েছে। তাঁরাই দলের গায়ে কালি লাগাচ্ছেন। দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। তাঁদের কোনও ভাবে রেয়াত করা হবে না। দলীয় কর্মীদের রুখে দাঁড়াতে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে।’
দলীয় কর্মীদের কেমন আক্রমণ করলেন? আগেও দুর্নীতি ইস্যুতে মুখ খুলেছিলেন তিনি। আবারও দুর্নীতি ইস্য়ুতে নাম না করে দলের একাংশ নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করলেন অর্জুন সিং। তাঁর কথায়, ‘একটা রাগ, অভিমান নিয়ে আমি ছেড়েছিলাম। এই সব অ্যাক্সিডেন্টাল নেতাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এরা দলের গায়ে কালি লাগাচ্ছে। দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তিকে নষ্ট করছে। এমন অনেকে নেতা হয়েছেন, যাঁদের আগে তৃণমূলের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না। তৃণমূল দলটা অনেক কষ্ট করে তৈরি করা হয়েছে। তাই দলের গায়ে কালি লাগাতে দেব না।’
কেন হঠাৎ এমন তির ছাড়লেন অর্জুন? কয়েকজন দলীয় নেতা–কর্মীদের দুর্নীতির জন্য গোটা দলকেই খারাপ চোখে দেখা হচ্ছে। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই আর এসব বরদাস্ত করা হবে না। সেটা বোঝাতেই অর্জুনের বিস্ফোরক অভিযোগ, ‘টাকার পাহাড় দেখিয়ে সারা বাংলায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে। দু’জন চুরি করছে, আর ৯৮% তৃণমূলের উপরে প্রশ্নচিহ্ন লেগে যাচ্ছে যে, এরা সব চোর। এই দু’জনকে চিহ্নিত করতে হবে। মানুষ কিন্তু সবটাই নজর রাখছে। এমন কিছু মানুষের জন্যই আমাদের অসুবিধা হচ্ছে। অনেক প্রশ্ন ট্রেনে, বাসে শুনতে হচ্ছে। অটোচালকদের বলছি, কেউ এক টাকা চাইলেও দেবেন না। দলে থেকে নেতা সেজে অনেকে ঠিকাদারি করছেন।’