এবারের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি এঁটে উঠতে পারেনি। বরং তাঁদের আসন সংখ্যা কমে গিয়ে ১৮ থেকে ১২ হয়ে গিয়েছে। আর ২৯টি আসন একাই দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেস একটি আসনে জয় পেয়েছে। আর ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে ‘বদলা নয়, বদল চাই’ বলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এখন বিজেপি অভিযোগ করছে, ভোট পরবর্তী হিংসা হচ্ছে। একুশের নির্বাচনের পরও একই অভিযোগ তোলা হয়েছিল। কিন্তু বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে এবার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জয়ী হয়েছে। ২০১৯ সালে হারানো আসন পুনরুদ্ধার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই ভোট পরবর্তী হিংসা যাতে না হয় তা নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন সদ্য জয়ী সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী।
ইতিমধ্যেই বাংলায় এই অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পা রেখেছে। সেখানে এই সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘বিরোধীদের উপর যেন কোন আক্রমণ না হয়। এমনকী জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবাও যেন বন্ধ না হয়।’ বাঁকুড়ার ইন্দপুরে ভোটদাতাদের অভিনন্দন জানানোর সভায় দলীয় কর্মী–সমর্থকদের এই বার্তা দিলেন বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী। কিন্তু যদি তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের উপর আক্রমণ নেমে আসে তাহলে সহ্য করা হবে না বলেও জানিয়ে দেন তিনি। সেখানেই অরূপবাবু বলেছেন, ‘বহু চক্রান্ত হয়েছে। বেইমানরা বেইমানি করেছে। তারপরও মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: ‘ঝুপড়ির গরিব মহিলারা আমাদের রক্ষাকর্ত্রী’, প্রকাশ্যে উপলব্ধি জানিয়ে দিলেন দমদমের সাংসদ
বিজেপির চার সদস্যের কেন্দ্রীয় দল বাংলায় ঘুরে গিয়েছেন। তার উপর ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। এই আবহে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অরূপবাবুর বক্তব্য, ‘যাঁরা আমাদেরকে ভোট দেয়নি, তাঁরা এখন অনুশোচনায় ভুগছেন। সবাই ভাল থাকুক। আর লড়াই হোক রাজনৈতিকভাবে। তবে বিরোধীদের কোনও পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। নির্বাচনের আগে অনেকেই আমাদের বিরুদ্ধে বিদ্রুপ, মিথ্যা অপপ্রচার করেছে। কিন্তু মানুষ আমাদের ভোট দিয়ে জিতিয়েছে। মানুষ বিরোধীদের থেকে মুখ ফিরিয়েছে। জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে তাঁদের প্রত্যাখ্যান করেছে। এরপরও আমরা ওঁদের বিরুদ্ধে কোনও প্রতিহিংসামূলক মনোভাব দেখাব না।’
এই বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্র থেকে ২০১৪ সালে জিতেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মুনমুন সেন। তবে সেটা ধরে রাখা যায়নি। কারণ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই আসনটি দখল করে নেয় বিজেপি। বিজেপির প্রার্থী সুভাষ সরকার এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। পরে কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীও হন। এবার বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে প্রার্থী করা হয়েছিল তালড্যাংরার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীকে। আর ফলাফলে দেখা গিয়েছে, ৩২,৭৭৮টি ভোটের ব্যবধানে সুভাষ সরকারকে পরাজিত করেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী।