একুশের নির্বাচনে আইপ্যাকের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। এখন ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে তাঁরা কাজে নেমেছেন। এমনকী ত্রিপুরায় সমীক্ষার কাজ পর্যন্ত করছে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক। একুশের নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দেখা যায় প্রশান্ত কিশোরকে। কারণ তিনিই দাবি করেছিলেন, বিজেপি একশো আসন পার করতে পারবে না। পারেওনি। সেখানে ‘আইপ্যাক’–এর কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঠিক কী বলেছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ? সোমবার সাংগঠনিক বৈঠক হয় ধনেখালির বেলমুড়ি কমিউনিটি হলে। সেখানেই কল্যাণ বলেন, ‘এতদিন যেভাবে দল চলত, এখন আর তা হবে না। কেউ কোনও সমস্যায় পড়লে দুঃখিত। কারণ আমি আর কিছু করতে পারব না। আইপ্যাক সংস্থা দলের কেন্দ্রীয় স্তরকে রিপোর্ট পাঠাচ্ছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই সব স্থির হবে। কাকে সৎ আর কাকে ওরা অসৎ বলবে আমার তা জানা নেই।’ এই মন্তব্য যে তাঁর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ তা কারও বুঝতে অসুবিধা হয়নি।
তিনি বরাবরই ঠোঁট–কাটা বলে পরিচিত রাজনীতির ময়দানে। আইনজীবী হিসাবেও দলের পাশে বারবার তিনি দাঁড়িয়েছেন। মোকাবিলা করেছেন সিবিআইয়ের দুঁদে আইনজীবীদের। সেখানে তিনি ‘আইপ্যাক’–এর রিপোর্ট নিয়ে বলেন, ‘আমার একটাই অনুরোধ, রিপোর্ট আপনারা দিন। কিন্তু আমরা যাঁরা ৩৮–৪০ বছর ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে দল করেছি, সিপিআইএমের গুলির সামনে লড়াই করেছি, সেই সব যোদ্ধাদের অতীত ইতিহাসকে একটা কলমের খোঁচায় আপনারা মুছে দেবেন না। তৃণমূল কংগ্রেসকে দুর্বল করবেন না। দয়া করে সত্যি রিপোর্টটা দিন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভালবেসে আমরা দল করেছি। যোগ্য কর্মীকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে।’
সাংসদের এই মন্তব্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কী দলে গুরুত্ব পাচ্ছেন না কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়? নাকি অন্য কোন কারণ দেখা দিয়েছে? ২০২৪ সালের সাংসদের টিকিট নিয়ে কি কোনও আঁচ পেয়েছেন তিনি? তবে জেলার এক নেতা বলেন, ‘শ্রীরামপুরের সাংসদ বর্ষীয়ান নেতা। ওঁর দুঃখের কথা উনি বলেছেন। আমি কোনও মন্তব্য করব না।’ এই জেলা নিয়ে আগে অভিযোগ তুলে বিজেপিতে গিয়েছিলেন প্রবীর ঘোষাল। তারপর আইপ্যাক নিয়ে সাংসদের এমন মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।