রাস্তা তৈরি হয়ে গিয়েছে এক মাস আগেই। কিন্তু তার মধ্যেই পিচ উঠে গিয়ে স্টোনচিপ বেরিয়ে গিয়েছে। রাস্তার এই কঙ্কালসার দশা দেখে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন বর্ধমান–দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কীর্তি আজাদ। প্রচণ্ড রেগে যান এমন কাজ দেখে। আর তখনই ইঞ্জিনিয়ারকে ধমক দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর পকেটে স্টোনচিপও ভরে দেন। এলাকা পরিদর্শন করতে এসে রাস্তা নিয়ে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বর্ধমান–দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ কীর্তি আজাদ। তিনি পূর্ব বর্ধমানের গলসি ১ নম্বর ব্লকে বেশ কিছু এলাকা পরিদর্শন করেন। এই ঘটনা দেখে হাততালি দেন রাস্তার চার পাশে ভিড় করা মানুষজন। কেউ কেউ সাংসদের রণংদেহী মেজাজ দেখে ছবিও তুলে রাখেন মোবাইলে।
গতকাল মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের গলসির মনোহরপুর–সুজাপুরে এসেছিলেন সাংসদ কীর্তি আজাদ। তাঁর কাছে আগেই অভিযোগ এসেছিল, ওই গ্রামের রাস্তার বেহাল দশা হয়ে পড়েছে। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই ওই গ্রামে যান তিনি। ব্লকের পোতনা পুরসা অঞ্চলে মনোহর–সুজাপুর গ্ৰামে পথশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাইমারী স্কুল থেকে গলিগ্ৰাম লকগেট পর্যন্ত প্রায় তিন কিমি রাস্তা সংস্কার করা হয়। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, রাস্তা সংস্কারের পরই রাস্তা থেকে পিচ উঠে পাথর বেরিয়ে যাচ্ছে। যা নিয়ে তাঁরা ওই রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিক্ষোভও দেখান। রাস্তার এমন দশা দেখে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে ডাকেন সাংসদ। আর তাঁকে বলেন, ‘আপনার সুপারিনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ারকে বলবেন এটা দেখতে। তিনি এই রাস্তা নিয়ে কী করবেন সেটা নিয়ে ভাবতে। এই রাস্তা কি তাঁর চোখে পড়েনি?’
আরও পড়ুন: সিকিমের প্রাক্তন মন্ত্রীর দেহ উদ্ধার তিস্তার খালে, খুন নাকি আত্মহত্যা? তদন্তে নেমেছে পুলিশ
তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদের কড়া প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি ওখানের অ্য়াসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার। আর তারপরই ওই ইঞ্জিনিয়ারের পকেটে স্টোনচিপ ভরে দেন কীর্তি আজাদ। জেলা পরিষদের সহকারী ইঞ্জিনিয়ারকে রীতিমতো ধমক দিতে দেখা যায়। সাংসদকে এমন ধমক দিতে দেখে খুশি হন উপস্থিত আমজনতা। তারা মনে করেন, সাংসদ কীর্তি আজাদের প্রচেষ্টায় ওই রাস্তা আবার ঠিক করা হবে। সাংসদ রেগে গিয়ে বলেন, ‘রাস্তা নিয়ে মানুষের অভিযোগ পেয়ে একজন সাংসদ চলে আসতে পারেন। আর একজন এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আসতে পারেন না? দিদির সরকার গ্রামের মানুষের জন্য কাজ করছে। আর মানুষকে এভাবে অসুবিধা ও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে? রাস্তার এই বেহাল দশা কেন?’
তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কাজ তুলে ধরেন কীর্তি। গোটা পরিস্থিতি জানিয়ে জেলাশাসককেও তিনি চিঠি লিখবেন বলে জানিয়েছেন। এমনকী যে ঠিকাদার সংস্থা ওই রাস্তা তৈরি করেছে সেই সংস্থাকে দিয়েই আবার রাস্তা সারাই করারও নির্দেশ দেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ বলেন, ‘এলাকার যাবতীয় সমস্যার বিষয়ে আমাকে জানাবেন। দিদি অনেক কাজ করছেন। ওনার কাজ সঠিকভাবে যেন হয়। আমরা সেটাই চাই। এই রাস্তা নিয়ে আমি জেলাশাসককে লিখিত জানাবো। কারও কোনও অসুবিধা থাকলে আমার কাছে আসবেন। সরাসরি আমার কাছে আসুন।’ নবনির্বাচিত এই সাংসদের রনংদেহী মেজাজ ও কাজ করার পদ্ধতি দেখে খুশি গ্রামবাসীরাও।