এবারের লোকসভা নির্বাচনে যে কটা চমক দেখা গিয়েছিল তার মধ্যে একটি ছিল হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হওয়া রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার চমকটা বেড়ে যায় যখন রচনা হারিয়ে দেন বিজেপির প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। কারণ ২০১৯ সালে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন লকেট। এখন তিনি ‘প্রাক্তন’ সাংসদ। আর এখানের নির্বাচনী প্রচারে এসে দিদি নম্বর ওয়ান রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘জিতলে আপনাদের পাশে থাকব।’ আর জিতেই কথা রাখলেন ঘরের মেয়ে রচনা। এখন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় চষে বেড়াচ্ছেন গোটা হুগলি জেলা। হাসপাতাল থেকে শুরু করে নানা অনুষ্ঠানে গিয়ে শুনছেন মানুষের কথা। তারপরই তার সমাধানে করছেন কাজ।
এই মেজাজে যে একজন অভিনেত্রীকে দেখা যেতে পারে সেটা অনেকে কল্পনাও করতে পারছেন না। শুক্রবার পাণ্ডুয়ায় আদিবাসীদের এক অনুষ্ঠানে এসে হুগলির নবনির্বাচিত সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের কাছে জানিয়ে দিলেন, প্রত্যেক মাসে একদিন করে তিনি হুগলি জেলাতে আসবেনই। আর এসে এলাকার মানুষের কথা যাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে পৌঁছে দেওয়া যায় সেই দায়িত্বও নেবেন তিনি। মাসে একদিন আসবেন কেন? এই প্রশ্নও অনেকে তুলেছেন। যদি তার সহজ উত্তর মিলেছে রচনার কাছ থেকেই। যেহেতু তিনি সাংসদ তাই তাঁকে নয়াদিল্লিতে যেতে হবে। সেখানের সংসদে বাংলার মানুষের কথা তুলে ধরতে হবে। দাবি আদায় করতে হবে। তাই মাসে একদিন এসে মানুষের কথা শুনে কাজ করবেন।
আরও পড়ুন: মরশুমের শুরুতেই ডায়মন্ডহারবারের বাজারে ঢুকল ইলিশ, বর্ষায় কত টাকায় মিলছে?
এবারের লোকসভা নির্বাচনে হুগলি কেন্দ্র থেকে প্রায় পঞ্চাশ হাজার ভোটে জিতেছেন ‘দিদি নম্বর ওয়ান’। বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে পরাজিত করে অভিনেত্রী ঘোষণা করেছিলেন, তারকা সাংসদরা কেমন কাজ করেন, সেটাও এবার মানুষকে দেখাবেন। শুক্রবার পাণ্ডুয়ার দমদমা ফুটবল মাঠে আদিবাসী সংগ্রামীদের মূর্তি উদ্বোধন করতে এসে রচনা বলেন, ‘নির্বাচনের আগে হুগলিতে বিরোধীরা প্রচার করেছিল যে আমি ভোটে জিতলেও এলাকাবাসী আমাকে কাছে পাবেন না। ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকব। কিন্তু সেটা আমি মিথ্যা প্রমাণ করব।’
এখানে সাঁওতাল বিদ্রোহের আট বীর শহিদের পূর্ণাবয়ব মূর্তি উন্মোচন করেন সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র–সহ অন্যান্য বিশিষ্টরা। ফুলের তোড়া দিয়ে রচনাকে বরণ করেন রামেশ্বরপুর গোপালনগর এবং বেলুন ধামাসিন গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই প্রধান। এখানেই রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মাসে অন্তত একদিন আপনারা আমাকে পাবেন। যদি আপনারা মনে করেন যে আপনাদের কাজ হচ্ছে না, ঠিক জায়গায় পৌঁছতে পারছেন না বা আপনাদের কথা কেউ শুনছেন না, আপনারা আমার জন্য অপেক্ষা করবেন। আমি যে দিন আসব, সে দিন আমার কাছে আসবেন। আমি আপনাদের প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা আলাদা করে কথা বলে প্রত্যেকের সুবিধা–অসুবিধা দেখব। এটা কথা দিয়ে গেলাম।’