ভারত জোড়ো যাত্রায় নেমে রাহুল গান্ধী ঘনিষ্ঠমহলে প্রশ্ন করেছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করলে কেমন হয়? তারপর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকটি মাস। এবার তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদের মুখ থেকে সেই ‘হাতে হাত’ মেলানোর কথা শোনা গেল। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ঠেকাতে কংগ্রেসের সঙ্গে ‘হাত’ মেলাতেই পারে তৃণমূল কংগ্রেস বলে মন্তব্য করেছেন সাংসদ বিহারীবাবু। এমনকী রবিবার কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীর প্রশংসা করেছেন আসানসোলের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা। শত্রুঘ্ন বলেন, ‘রাহুলের ক্যারিশমা কাজ করতে শুরু করেছে।’
ঠিক কী বলেছেন বিহারীবাবু? ইতিমধ্যেই সব রাজনৈতিক দলই অনুভব করেছে বিরোধী শক্তি এককাট্টা না হলে মোদী সরকারের একনায়কতন্ত্র রোখা যাবে না। তা নিয়ে বিরোধী দলগুলির মধ্যে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শত্রুঘ্ন সিনহা বলেন, ‘আজ সম্পর্ক ভাল নয় বলে আগামীকাল যে ভাল হবে না, তার কোনও মানে নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বড় বিরোধী দলগুলি যদি একজোট হয়, তাহলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ঘটবে। কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ ভাল সাড়া ফেলেছে। রাহুল গান্ধীর ক্যারিশমা কাজ করতে শুরু করেছে। আমার মনে হয়, রাহুলের এই কর্মসূচিতে আগামী লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস দ্বিগুণ আসন পাবে।’ লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘খেলা ঘুরিয়ে দেবেন’ বলেও মন্তব্য করেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ।
কেন এমন মন্তব্য করলেন শত্রুঘ্ন? তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র জাগো বাংলায় বারবার কংগ্রেসের সমালোচনা করা হয়েছে। সেখানে কংগ্রেসের পক্ষে এই সুর তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদের বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এই মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আসানসোলের সাংসদ বলেন, ‘লক্ষ লক্ষ মানুষ রাহুল গান্ধীকে সমর্থন জানাচ্ছে। উনি ওঁর নেতৃত্বদানের ক্ষমতা প্রমাণ করে দিয়েছেন। রাহুল গান্ধীকে নেতা হিসাবে গ্রহণ করেছে মানুষ। যাঁরা ওঁকে ‘পাপ্পু’ বলে ঠাট্টা করেন, তাঁরা ভুল প্রমাণিত হলেন।’ এখন প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কী ঘুরপথে কংগ্রেসকে বার্তা দেওয়া হচ্ছে?
নিখোঁজ পোস্টার নিয়ে কী বললেন? আসানসোলে শত্রুঘ্নের নামে নিখোঁজ পোস্টার পড়েছিল। এই নিয়েও তিনি বলেন, ‘আসানসোলের মানুষ যাঁদের লাপাতা করে দিয়েছে তাঁরা দিচ্ছে লাপাতার পোস্টার। ভোটের পর হেরে যারা নিজেরাই লাপাতা হয়ে গিয়েছে তাঁরা আমাকে লাপাতা করার কথা ভাবছে। উপনির্বাচনে যাঁরা পরাজয় হজম করতে পারেননি, তাঁরাই এর নেপথ্যে রয়েছেন। এখানকার মানুষের ছট নিয়ে ভক্তি ও উন্মাদনা দেখে মনে হচ্ছে পাটনায় চলে এসেছি। আমার মা ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত ছটের ব্রত রাখতেন। আমাদের পাটনায় পরব হয়। আমাদের বাড়িতে পরব হয়। আসানসোলে এসে মনে হচ্ছে নিজের বাড়িতে চলে এসেছি। আমি অভিভূত। আমার চোখে জল চলে এল। দুর্গাপুজোর সময় আমি আমার কেন্দ্রে ছিলাম। ছটপুজোতেও থাকছি আসানসোলে। নিয়মিত যাই এলাকায়।’