হরিনাম সংকীর্তন চলাকালীন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর শ্লীলতাহানি ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর, হুমকির অভিযোগ উঠল! শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে যিনি মূল অভিযুক্ত, তিনি আবার তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা! শুধু তাই নয়, তিনি এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যও বটে! আর বাকি দু'জন তাঁরই অনুগামী!
বৃহস্পতিবারের রাতের এই ঘটনার জেরে শুক্রবারও থমথমে হয়ে রয়েছে ভাঙড়ের বামনঘাটা এলাকা। সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলে অভিযোগকারিণীর পরিবারের সদস্যদের দাবি, তাঁরা ওই ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কে রয়েছেন।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনা প্রসঙ্গে যেসমস্ত প্রতিবেদন সামনে এসেছে, সেই অনুসারে - বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লেদার কমপ্লেক্স থানার অন্তর্গত বামনঘাটা এলাকায় হরিনাম সংকীর্তনের আসর বসেছিল। সেখানেই বাকি অনেকের মতো গিয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ওই কিশোরী।
অভিযোগ, সেই সময়েই সেখানে এসে উপস্থিত হন অভিযুক্ত ওই তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সদস্য। তিনি ওই নাবালিকার হাত ধরে টানাটানি করেন। নাবালিকা তাঁকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। ওই তৃণমূল নেতার টানাটানির ফলে নাবালিকার পোশাকও ছিঁড়ে যায়। সূত্রের দাবি, ঘটনার সময় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মদ্যপ ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে নাবালিকাকে আপত্তিকরভাবে স্পর্শ করারও অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, সকলের সামনে এভাবে হেনস্থার শিকার হয়ে ওই নাবালিকা ঘাবড়ে যায়। কিন্তু, ভয়ে এবং ঘটনার আকস্মিকতায় সে ওই অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্যকে কিছু বলার সাহস পায়নি। বদলে কাঁদতে কাঁদতে হরিনাম সংকীর্তনের আসর থেকে সোজা বাড়ি ফিরে যায়।
পরিবারের সদস্যরা তাকে কাঁদতে দেখে জানতে চান, কী হয়েছে। তখন নাবালিকা তাঁদের পুরোটা খুলে বলে। এরপর পরিবারের সদস্যরা সকলে মিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ততক্ষণে সেখানে ওই তৃণমূল নেতার সাঙ্গোপাঙ্গোরাও জুটে যান বলে দাবি করা হচ্ছে।
নাবালিকার পরিবারের সদস্যদের দেখে নাকি বেজায় ক্ষেপে যান শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত ওই তৃণমূল নেতা। তিনি ও তাঁর অনুগামীরা এরপর সেখানেই ওই কিশোরীর পরিবারের সদস্যদের উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। এই সময় ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বাড়ির লোকেদের মারধর করা হয়, হুমকিও দেওয়া হয় বলে দাবি সূত্রের।
শেষমেশ পরিস্থিতি এতটাই উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে যে ঝামেলা থামাতে পুলিশকে খবর দিতে হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় স্থানীয় থানার পুলিশবাহিনী। তারা এসে বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় উত্তেজনা প্রশমিত করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরবর্তীতে এই ঘটনায় নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করা হয়ে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূল কংগ্রেসের ওই নেতা তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একইসঙ্গে তাঁর দুই শাগরেদকেও গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার তদন্ত চলছে। সমস্ত অভিযোগ পুলিশ খতিয়ে দেখছে বলে দাবি সূত্রের। যদিও এলাকাবাসী এই ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলছেন।