কোনও চাকরি না করেও কীভাবে ৪০ লক্ষ টাকার বাড়ি, ২০–৩০ লক্ষ টাকার সম্পত্তির মালিক হলেন? সরকারি কর্মসূচিতে গ্রামে গিয়ে সরাসরি এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হল তৃণমূলের এক উপপ্রধানকে। তাঁকে কাছে পেয়ে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিলেন আসানসোল জামুড়িয়ার চুরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। শেষে হাতজোড় করে গ্রাম থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন উপ প্রধান প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। এই ঘটনার এক ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও–র সত্যতা স্বীকার করে নিলেও গ্রামবাসীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চুরুলিয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, এই ঘটনার পিছনে রয়েছে বিজেপি–র লোকজন। জানা গিয়েছে, সোমবার নির্মল বাংলা প্রকল্পের ব্যাপারে চুরুলিয়ার দক্ষিণ রুইদাসপাড়ায় গিয়েছিলেন প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, স্বপন রুইদাস নামে এক গ্রামবাসী আচমকা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের পাশাপাশি ভিত্তিহীন কথা বলতে শুরু করেন। প্রদীপবাবুর দাবি, উসকানিমূলক মন্তব্য করে ওই ব্যক্তি সাম্প্রদায়িক অশান্তি পাকানোরও চেষ্টা করেন।
এদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিও–তে দেখা গিয়েছে, প্রদীপবাবুর ওপর চড়াও হয়ে স্বপন রুইদাস নামে ওই ব্যক্তি অভিযোগ করে বলছিলেন, ‘কোনও উন্নয়নের কাজ হয়নি এই গ্রামে। কিন্তু নিজে ৪০ লক্ষ টাকার বাড়ি করে নিয়েছেন উপ প্রধান। আলাদা সম্পত্তি রয়েছে ২০–৩০ লক্ষ টাকার।’ তাঁর প্রশ্ন, কোথা থেকে এল এত টাকা?’ এর পরই দেখা যায়, গালিগালাজ করতে করতে টর্চ হাতে নিয়ে মারমুখী হয়ে উঠেছেন স্বপন রুইদাস। শেষে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে এলাকা ছাড়েন প্রদীপ মুখোপাধ্যায়।
প্রদীপবাবু এ ব্যাপারে বলছিলেন, ‘ওই ব্যক্তি একেবারেই স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন না। এই অবস্থা দেখে ওই এলাকা ছেড়ে আমি চলে আসি।’ তাঁর অভিযোগ, ‘আগে সিপিএম করল স্বপন রুইদাস। এখন গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। পুরো ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। ওরা ছক কষে আমাকে হেনস্থা করল। আর সবটাই গোপনে ভিডিও রেকর্ড করা হয়েছে।’ যদি এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, রাস্তাঘাট, আলো— কিছুই নেই চুরুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকায়। এখানে কোনওরকম উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। সেই ক্ষোভেরই বহিপ্রকাশ করেছেন স্বপন রুইদাস।