পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যকে বোমাবাজি ও গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল। আর তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল মুর্শিদাবাদের কান্দিতে। এখানের সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী। যিনি লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা। তাঁর এলাকায় রাজনৈতিক খুনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ বুধবার রাতে জীবন্তী হল্ট স্টেশনে বোমা মেরে ও গুলি করে খুন করা হয় ওই তৃণমূল নেতাকে। নিহত পঞ্চায়েত সদস্যের নাম রাজা শেখ (৪০)।
ঘটনাটি টের পাওয়ার পরই গ্রামবাসীরা পুলিশকে খবর দেয়। তাঁরাই আহত তৃণমূল নেতাকে উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসকরা ওই তৃণমূল নেতাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার নেপথ্যের কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা। তাঁর বাড়ি কান্দির ধলা গ্রামে। ঘটনার পর থেকেই চাপা উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়। গোটা ঘটনার তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ জীবন্তী হল্ট স্টেশন এলাকায় ছিলেন ওই তৃণমূল নেতা তথা মহলন্দি ২ নম্বর পঞ্চায়েতের সদস্য রাজা শেখ। অভিযোগ, তখন তাঁর ওপর হামলা চালায় কয়েকজন দুষ্কৃতী। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। এরপর সেখান থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। কান্দি ব্লক তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম সরকার জানান, জনদরদি নেতা ছিলেন রাজা। বুধবার সন্ধ্যেবেলা কে বা কারা রাজাকে ফোন করে ডাকে। রাজা ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই রাত ১০.৩০ নাগাদ কিছু দুষ্কৃতী হঠাৎই তাঁর উপর চড়াও হয়। শুরু করে বোমাবাজি। এরপরই মৃত্যু নিশ্চিত করতে রাজাকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় তারা। শব্দ পেয়ে গ্রামবাসীরা ছুটে যেতেই দুষ্কৃতীরা রেললাইন ধরে চম্পট দেয়।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন কান্দির এসডিপিও সানি রাজা ও আইসি সুভাষ ঘোষ। পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনীও। দেহ উদ্ধার করে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠান হয় ময়নাতদন্তের জন্য। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই এলাকায় কারা ছিলেন, তাঁর সঙ্গে অন্য কেউ ছিলেন কি না সেই সমস্ত বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া ঘটনার কোনও প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন কি না তাও জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। দুষ্কৃতীদের খোঁজে রাতভর এলাকায় তল্লাশি চালায় বহরমপুর থানার পুলিশ। তবে এখনও গ্রেফতার হয়নি কেউ।
এই খবর পৌঁছতেই শোকের ছায়া নেমে আসে মৃতের পরিবারে। দুষ্কৃতীদের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। একইসঙ্গে দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যের খুনের ঘটনায় দোষীরা যাতে উপযুক্ত শাস্তি পায় সেই দাবি জানিয়েছে তৃণমূলও। নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে ততই বাড়তে পারে এই ধরনের হিংসার ঘটনা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তবে ঘটনার নেপথ্যে রাজনৈতিক, পারিবারিক না ব্যবসায়িক শত্রুতা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।