তৃণমূল কংগ্রেস পঞ্চায়েত প্রধানের উপরই আস্থা রাখতে পারলেন না তৃণমূল কংগ্রেস সদস্যরা। তাই বহরমপুর ব্লকের মণীন্দ্রনগর পঞ্চায়েতের প্রধানকে সরিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসেরই সদস্যরা। পঞ্চায়েতে তাঁরা মিলিত হয়ে প্রধান মনোজ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন। ফলে অপসারিত হলেন মনোজবাবু। এবার বিডিও যেদিন নতুন প্রধান নির্বাচনের দিনক্ষণ জানাবেন সেদিন ওই পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচিত হবেন।
এই বিষয়ে উপ–প্রধান সাকিলা খাতুন অভিযোগ করেন, ‘আমাদের আড়ালে রেখে প্রধান সব কাজ করতেন। তাঁর আচার–ব্যবহারের জন্য সম্পর্কও ভাল ছিল না।’ পাল্টা অপসারিত প্রধান মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী কোনও প্রস্তাব পঞ্চায়েতের সাধারণ সভায় পাশ না করলে কোনও কাজই হয় না। প্রশাসন সরাসরি নির্দেশ দিলে প্রধান সদস্যদের না জানাতেই পারেন। কারণ প্রশাসনের হুকুমে সেই কাজ করতে হয় প্রধানকে। এই ন্যূনতম জ্ঞান থাকা উচিত।’
পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, সোমবার থেকে সারগাছির একটি রিসর্টে পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্যদের আটকে রাখা হয়েছিল। আর বৃহস্পতিবার অনাস্থা আনার ঠিক আগে তাঁদের সেখান থেকে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয় এবং পঞ্চায়েতের একটি ঘরে রাখা হয়। পরে বিডিওর প্রতিনিধি এসে অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং পুলিশের পাহারায় বাড়িতে পৌঁছন।
আবার গুরুদাসপুর পঞ্চায়েতে নতুন প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন ওই পঞ্চায়েতেরই উপ–প্রধান শাহজাহান মণ্ডল। তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত বহরমপুর ব্লকের ওই পঞ্চায়েতের প্রধান ইউনুস আলির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে অনাস্থা এনেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসেরই সদস্যরা। দলীয় সূত্রে খবর, ইউনুস, মনোজ দলেরই প্রাক্তন ব্লক সভাপতি আশিস সরকার গোষ্ঠীর সদস্য। আবার গুরুদাসপুরে নয়া প্রধান এখন ব্লক সভাপতি আইজুদ্দিন মণ্ডলের পক্ষে। এমনকী ওই দুই তৃণমূল কংগ্রেস নেতার অন্তর্দ্বন্দ্বই বহরমপুর ব্লকের একাধিক পঞ্চায়েতের প্রধান অপসারণের মূল কারণ।
উল্লেখ্য, বহরমপুর ব্লকের অধীন ১৭টি পঞ্চায়েত রয়েছে। একটি বিজেপি’র। এবার সেই সাটুই পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধেও অনাস্থার সলতে পাকাতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। জেলা সভাপতির নির্দেশ উপেক্ষা করে জেলার একের পর এক পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনায় বিব্রত জেলা নেতৃত্বও।