পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গকে পৃথক করার দাবিতে সরব জন বারলা। এই আবহেই কয়েকদিন আগে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন আলিপুরদুয়ারের সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা সহ ৮ শীর্ষ নেতা। যা পরিস্থিতি, তাতে রাজ্যের রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন উত্তরবঙ্গ। তবে জন বারলার বারংবার পৃথক রাজ্যের দাবি যে বাংলার মানুষ ভালো চোখে নিচ্ছে না, তা বুঝেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এরই মাঝে অস্বস্তির নাম গঙ্গাপ্রসাদ। একদা আরএসএস ঘনিষ্ঠ এই নেতা বিজেপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আলিপুরদুয়ারে ঘাসফুল ফোটানোর চেষ্টা করবেন, আর সেই চেষ্টা করতে গিয়ে যে বিজেপিতে ভাঙন ধরাবেন, তা একপ্রকার স্পষ্ট।
এই পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালে জন বারলা নিজের আসন ধরে রাখতে পারবেন? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আকারে ইঙ্গিতে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন গঙ্গাপ্রসাদ। বিধানসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ারে বিজেপির ফুল মার্কস পাওয়ার কৃতিত্ব যে তাঁর, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন গঙ্গাপ্রসাদ। তার মাঝে পৃথক রাজ্যের আবেগকে উসকে দিচ্ছেন জন বারলা। যা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। এর ফায়দা তুলতে ময়দানে নেমেছে তৃণমূলও।
মঙ্গলবার গঙ্গাপ্রসাদ এবং বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া ৮ নেতাকে জেলা নেতৃত্বের তরফে মাদারিহাটে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। এই অনুষ্ঠানেই জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃদুল গোস্বামী জানান কীভাবে দলের প্রতি গঙ্গাপ্রসাদের দায়বদ্ধতা দেখে তিনি মু্গ্ধ হন। তিনি দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখে দলে এসেছেন গঙ্গাপ্রসাদরা। গঙ্গাপ্রসাদবাবু নাকি তাঁকে নির্বাচনের আগে বলেছিলেন, 'বিধানসভায় আমরা পাঁচটা আসনই জিতব। তারপর, আপনাদের কাছে যাব। এখন আমরা দল ছাড়লে গদ্দার তকমা দেবে। তা হতে দেব না। আমরা জিতে বুঝিয়ে দেব কেন আমরা দলে ছিলাম।'
উল্লেখ্য, রাজ্যজুড়ে মমতা ঝড়ে কার্যত উড়ে গেলেও উত্তরবঙ্গে বিজেপি নিজেদের জমি ধরে রাখে। আলিপুরদুয়ার জেলায় তাঁরা পাঁচে পাঁচ পায়। তা সত্ত্বেও আলিপুরের বিজেপি নেতৃত্বের দলবদলে অবাক অনেকেই। যদিও গঙ্গাপ্রসাদদের দলবদলকে পাত্তা দিতে নারাজ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এদিকে দলের এই বড় ভাঙনের পর ঘর গোছাতে ব্যস্ত বিজেপি। আগামী ২৯ জুন বিজেপির রাজ্য কার্যকরী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই আলিপুরদুয়ার জেলার নয়া সভাপতি বেছে নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই ভূষণ মোদককে জেলার সংযোজক রূপে নিযুক্ত করেছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।