তিনি ছিলেন, তিনি আছেন এবং তিনি থাকবেন বলেই মনে করেছিলেন। এমনকী তিনি প্রায় দেড় দশক ধরে তমলুক শহর তৃণমূলের সভাপতি পদে কাটিয়েও ফেলেছিলেন। ২০১৯ সালে সেই পদ খুঁইয়ে হয়েছিলেন দলের অন্তর্বর্তীকালীন শহর কোর কমিটির সদস্য। এবার সেই কমিটির সদস্য পদ থেকেও বাদ পড়লেন দিব্যেন্দু রায়। যা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
জানা গিয়েছে, তাঁর স্ত্রী লীনা মাভৈ রায় ২০১৫ সাল থেকে তমলুকের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ছিলেন। এখন তিনি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডে ওয়ার্ড কো–অর্ডিনেটর পদে রয়েছেন। ২০১৯ সালে দিব্যেন্দু শহর সভাপতি পদে থাকাকালীন সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরিতে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সরকারি প্রকল্প পাইয়ে দিতে বাঁ–হাতের কাজ সেরেছিলেন বলেই অভিযোগ। এমনকী সেই অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই তৈরি হয়েছিল ক্ষোভ।
তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব দলের তমলুক শহর সভাপতির পদ থেকে দিব্যেন্দুকে সরিয়ে দেন এবং শহর কমিটি ভেঙে দেয়। আর অন্তর্বর্তীকালীন হিসেবে বিশ্বনাথ মহাপাত্রকে তৃণমূলের তমলুক শহর সভাপতি পদে নিযুক্ত করা হয়। তারপর শহরে দলের ২৬ জনের একটি কোর কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই কোর কমিটির সদস্য করা হয় দিব্যেন্দুকে। এবার তৃণমূল জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী তমলুক শহর তৃণমূলের সভাপতি হিসেবে বিশ্বনাথ মহাপাত্রের নাম ঘোষণা করেছেন। শহর তৃণমূলের যে কমিটি গড়া হয়েছে, তাতে ঠাঁই হয়নি দিব্যেন্দু রায়ের।
জেলার রাজনীতিতে দিব্যেন্দু মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তাঁর ঠাঁই না হওয়া নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে তমলুকে শুভেন্দুর বহু কর্মসূচিতে গরহাজির থেকেছেন দিব্যেন্দু। কমিটিতে ঠাঁই না মেলায় অন্য সমীকরণ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে নয়া সভাপতি বিশ্বনাথ মহাপাত্র অবশ্য বলেন, ‘দিব্যেন্দু জেলাস্তরের নেতা। শহর কমিটিতে না থাকলেও দলের নেতা হিসেবে আমাদের চালনা করবেন। এতে বিতর্কের কিছু নেই।’ আর দিব্যেন্দু ভাঙলেন কিন্তু মচকালেন না। তাই তাঁর বক্তব্য, ‘১৪ বছর দলের শহর সভাপতি পদে ছিলাম। তাই শহর কমিটিতে না থাকা নিয়ে কেউ অন্যভাবে ব্যাখা পেতেই পারেন। আমি এখন দলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি হিসেবে দলের জেলা কমিটির সদস্য।’