বিজয়া দশমীর পর নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন মুকুল রায়। তারপর আবার সব চুপচাপ হয়ে গিয়েছিল। এবার ফের রাজনৈতিক সমুদ্রে যেন ঢেউ খেলে উঠল। কারণ কালীপুজোয় দেখা গেল মুকুল রায়ের বাড়িতে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের ভিড়। মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করতে যান পার্থ ভৌমিক, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অর্জুন সিংরা। হঠাৎ এই গোপন বৈঠক কী নিয়ে? তাহলে কি পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও নতুন স্ট্র্যাটেজি? উঠছে প্রশ্ন।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? মুকুল রায় এখন তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে এসেছেন। জেলবন্দি পার্থের মহাসচিব পদে তাঁর বসার কথা চলছে। এবার দুর্গাপুজো শেষে বিজয়া সারতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি যান মুকুল রায়। সেখানে নেত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা হয় বলে সূত্রের খবর। এবার কালীপুজোতে মুকুল রায়ের বাড়িতে যান অর্জুন সিং, কাঁচড়াপাড়ার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার একাধিক কাউন্সিলর, বর্ধমানের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারাও। এখানে একটি ঘরোয়া বৈঠক হয়। আর সেখানে মুকুল রায় কেমন করে কামব্যাক করবেন অর্থাৎ কাজ শুরু করবেন তা নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপিকে নিজের ক্যারিশ্মা দেখাতে চান তিনি বলে সূত্রের খবর।
মমতা–মুকুলের কথা কী পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে হয়েছিল? বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে দেখা যাচ্ছে, পঞ্চায়েত এলাকা থেকে একাধিক নেতারাই বারবার মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রণকৌশল তৈরি করতেই এখন বৈঠক হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। মুকুল রায়ের বাড়িতে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের আগমন নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। যদিও এই নিয়ে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘তৃণমূলে মুকুল রায় ২০১৯ সালে গদ্দার ছিলেন। তারপর একুশে গদাধর হয়ে গিয়েছেন। প্রত্যাবর্তন করেছেন। সুতরাং কে সক্রিয় হচ্ছে, তা নিয়ে ভাবে না বিজেপি।’
ঠিক কী নিয়ে বৈঠক হয়েছিল দু’পক্ষের? সূত্রের খবর, পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে গিয়েছেন। আর দল এবং সরকার— সব পদ থেকেই তাঁকে সরানো হয়েছে। কিন্তু মহাসচিব পদটি বিলুপ্ত হয়নি। মুকুল রায়কে ওই পদে বসিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ক্যারিশ্মা দেখাতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। তাই এই দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে মুকুল–মমতার মধ্যে। দুর্গাপুজোর আগে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ফোন করেছিলেন মুকুল রায়কে। তার পরদিন তৃণমূল ভবনে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল রায় সাহেবের। তার পর এবার দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক।