শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ের ধাক্কায় মৃত যুবকের বাড়িতে গেল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল। আজ, শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের বাসিন্দা ওই মৃতের বাড়িতে যান তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন, চণ্ডীপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী–সহ তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যান্য প্রতিনিধিরা। মৃতের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে বিরোধী দলনেতাকে গ্রেফতারের দাবিতে সোচ্চার হন তাঁরা। আজই গ্রেফতার করা হয় ঘাতক গাড়ির চালক আনন্দ পাণ্ডাকে। এই ঘটনায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তাঁর পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে চণ্ডীপুরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ের গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় চণ্ডীপুর বিধানসভার ভৈরবপুরের বাসিন্দা শেখ ইসরাফিলের। আজ, শুক্রবার গ্রামবাসীদের ক্ষোভে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবরুদ্ধ হয়ে থাকে দিঘা–নন্দকুমার জাতীয় সড়ক। আজ, শুক্রবার দোলা সেন, সোহম চক্রবর্তী, বীরবাহা হাঁসদা, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাংশু ভট্টাচার্য, তন্ময় ঘোষ, জয়া দত্ত, সুদীপ রাহা–সহ পূর্ব মেদিনীপুরের নেতাদের নেতৃত্বে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস একটি প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত করে। আর সেখানেই তাঁরা শুভেন্দু অধিকারীর গ্রেফতারের দাবি তোলেন।
অন্যদিকে এই ঘটনা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতি এখন তোলপাড়। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘পিষে মেরে দেওয়ার পর শুভেন্দু কনভয় থামিয়ে উদ্ধারের মানবিকতা দেখাননি। পালিয়ে গিয়েছেন। আসানসোলেও একইভাবে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তাই ফেরার আসামী শুভেন্দুর গ্রেফতার চাই।’ আর রাজ্যসভা সাংসদ জহর সরকার টুইট করে লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা একজন ব্যক্তিকে গাড়ি দিয়ে ধাক্কা মেরে খুন করল। এই জীবনটাও বাঁচানো যেত যদি তাঁকে তুলে কাছের হাসপাতালে ভর্তি করা হতো। অবিস্মরণীয়।’
তারপর ঠিক কী ঘটল? এই ঘটনার পর গ্রামবাসীরা দাবি করেন, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বুলেটপ্রুফ গাড়িটি প্রচণ্ড গতিতে এসে ধাক্কা মারে। তারপর বেরিয়ে যান। পাশাপাশি তাঁরা আরও দাবি তোলেন যে, গাড়ির চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। এই ঘটনার পর থেকে গোটা অঞ্চল জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ইসরাফিলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন। বাংলা বিচারের দাবিতে অপেক্ষা করছে বলে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে টুইট করা হয়েছে। বাংলা এই ঘটনায় শুভেন্দুকে ধিক্কার জানাচ্ছে বলেও লেখা হয়। তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির সামনে প্রতিবাদ জানাবেন বলে কাঁথিতে এসে উপস্থিত হয়েছেন। আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এলাকার দলীয় নেতাদের বলেছেন, ‘শোকাহত পরিবারকে সব ধরনের সহায়তা যেন করা হয়। দলের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা করা হবে।’ আজ মৃতদেহে মাল্যদান করে কর্মসূচি শেষ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–নেত্রীরা।