আবার হুমকি দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আরাবুল ইসলাম। কয়েকদিন ধরে ভাঙড়ে আইএসএফ–তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। তাই ভাঙড়ে আর উন্নয়ন দিয়ে হবে না, তার বদলে পিঠের চামড়া তুলে নিতে হবে বলে নিদান দিলেন আরাবুল ইসলাম। আইএসএফ নিয়ে এমন মন্তব্যের পর ভাঙড়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তাহলে কি আবার দু’পক্ষের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হবে ভাঙড়? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে মানুষের মনে। পিঠের চামড়া তোলার হুঁশিয়ারি দিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন আরাবুল ইসলাম। এটা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে আইএসএফের সভাকে কেন্দ্র করে রবিবার ভাঙড়ের ঘটকপুকুরে সংঘর্ষ হয় দু’পক্ষের মধ্যে। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, মদ্যপানের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণদের মিটিংয়ে নিয়ে যায় আইএসএফ। পাল্টা আইএসএফের দাবি, তাদের পথ আটকে ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা। এই নিয়েই সংঘাত। তারপর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পালটা সভা করে তৃণমূল কংগ্রেস। সেখান থেকেই বেফাঁস মন্তব্য করেন আরাবুল ইসলাম। আইএসএফকে তীব্র আক্রমণ করেন আরাবুল ইসলাম ও শওকত মোল্লারা। নওশাদের দল আগামীতে যেখানে মিটিং মিছিল করবে, তার দূরে কাঁচা বাঁশ, লাঠি নিয়ে তৈরি থাকতে হবে বলে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের নিদান দেন আরাবুল।
ঠিক কী বলেছেন আরাবুল? ভাঙড়ের ঘটকপুকুরে তৃণমূল কংগ্রেসের সভা থেকে আরাবুল ইসলাম বলেন, ‘এদের পিঠের চামড়া তুলে নিতে হবে। তারপর এদের জবাব দিতে হবে। ভাঙড়ের মাটিতে উন্নয়ন দিয়ে, পরিষেবা দিয়ে কিছু হবে না। এরা যে ভাষা বোঝে, নওশাদরা যে ভাষা বোঝে, নওশাদের চ্যালারা যে ভাষা বোঝে, সেই ভাষাই ব্যবহার করতে হবে ভাঙড়ে। ভাঙড়ে উন্নয়নের বদলে আইএসএফের পিঠের চামড়া তুলে নিতে হবে। কারণ, এরা উন্নয়ন চোখে দেখতে পায় না। এরা শুধু মার বোঝে। তাই এদের পিঠে মারতে হবে।’
আর কী জানা যাচ্ছে? আরাবুলের এই বক্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই জোর সমালোচনা শুরু হয়েছে। দলের শীর্ষনেতারা যেখানে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বার্তা দিচ্ছেন, সেখানে কেমন করে প্রকাশ্য জনসভায় আরাবুলের মতো নেতারা এমন উস্কানি দিচ্ছেন? দলের বেঁধে দেওয়া সুর কি মানতে নারাজ? পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে এমন মন্তব্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে ভাঙড়ে। এই বিষয়ে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, ‘কুকথা বলে, কটূ কথা বলে রাজনীতির শিরোনামে থাকতে চায়। দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে নিজেদের জাহির করতে চায়। বড় দায়িত্ব পেতে চায় এরা। আগেও বলেছে হাত কেটে নেবে, কবজি কেটে নেবে। এখন আরাবুল সাহেব মারার নিদান দিচ্ছেন। আরাবুল সাহেবের তো রেকর্ড আছেই। উনি কলেজের অধ্যাপিকাকে জগ ছুড়ে মেরেছেন। তাঁর বাড়ির বাগান থেকে বোমা উদ্ধার হয়েছে। তাঁর কথাকে সায় দিচ্ছে শওকত সাহেব। তৃণমূল এরকমই। তবে এভাবে আইএসএফকে দমিয়ে রাখা যাবে না।’