জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) বিরোধিতা করে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে ‘বহিরাগত’-রা ঢুকে যাতে অশান্তি পাকাতে না পারে, সেজন্য কি এনআরসির (প্রকৃত ভারতীয়দের পঞ্জিকা) মতো ব্যবস্থার সওয়াল করলেন রাজ্য তৃণমূলের তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য? তাঁর নয়া দাওয়াইয়ের পর এমনই প্রশ্ন উঠছে। যদিও সরকারি বা প্রশাসনিক স্তরে নয়, আমজনতার কোর্টে সেই দাওয়াইয়ের বল ঠেলেছেন দেবাংশু। তাঁর বক্তব্য, নিজের এলাকায় কারা ফ্ল্যাট কিনছে, বাইরে থেকে এসে কারা ভোটার তালিকায় নাম তুলছেন, সেদিকে কড়া নজর রাখতে হবে সাধারণ মানুষকে।
বুধবার ফেসবুকে দেবাংশু লেখেন, ‘একুশের ভোটের পর দুর্বল বিজেপি বছর দেড়েক বাংলায় বহিরাগত অনুপ্রবেশ ঘটাতে পারেনি। কিন্তু কয়েকটি ইস্যুতে অক্সিজেন পেয়ে আবার বর্গি দিয়ে বাংলা দখলের খেলা শুরু হয়েছে। আপনাদের এলাকায় নতুন ফ্ল্যাটগুলি কারা এসে কিনছেন, ভোটার তালিকায় কারা বাইরে থেকে এসে নাম তোলাচ্ছেন, সব তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে খেয়াল রাখুন। নাহলে প্রতি বছর পাড়ায়-পাড়ায় রিষড়া, পাড়ায়-পাড়ায় শিবপুর আর রোজ রাতে এমনই লাগামহীন কর্কশ ডিজের আওয়াজের নিয়মিত শ্রোতা হওয়ার প্রস্তুতি নিন।’
দেবাংশু-সহ তৃণমূলের দাবি, রামনবমীর সময় হাওড়ার শিবপুর এবং হুগলির রিষড়ায় যে ঝামেলা হয়েছে, তাতে বিজেপির মদত আছে। বহিরাগত লোক এনে উস্কানি দেওয়া হয়েছে। তার জেরেই হাতের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে পরিস্থিতি। যে অভিযোগ শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। যদিও যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। বরং পালটা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার জেরে পুরো ঘটনা হয়েছে বলে দাবি করেছে গেরুয়া শিবির।
দেবাংশুর সম্পূর্ণ ফেসবুক পোস্ট
'বহু বন্ধু-বান্ধব ফোন করে জানালেন, কোন্নগর থেকে চন্দননগর পর্যন্ত গতকাল সারারাত ডিজের দুমদাম শব্দ শোনা গেছে। কেউ কেউ ভোর চারটে পর্যন্ত এই আওয়াজ শুনেছেন..অনেকেই এ নিয়ে চিন্তিত।
আজ খবর পাচ্ছি, রাতভোর নাকি এভাবেই রামনবমী পালিত হচ্ছে! যদিও নবমী, দশমী, একাদশী, দ্বাদশী ত্রয়োদশী সব পেরিয়ে গিয়ে আজ চতুর্দশী! ওদিকে ওদের নবমী নাকি এখনও শেষ হয়নি! গোটা দুনিয়াকে ঘুমাতে না দিয়ে এ কিসের রামনবমী? দাঙ্গার আগুনে দেশকে জ্বালিয়ে, এ কিসের রাম নবমী? বন্দুক, বোমা নিয়ে, এ কিসের রাম নবমী? যে স্নিগ্ধ দুর্গাপুজোর গন্ধ, কাশের দোলার সঙ্গে সম্পৃক্ত এ রাজ্যের হিন্দু বাঙালিরা, তাদের উপর এ কোন নতুন সংস্কৃতি চাপানোর খেলা চলছে?
একুশের ভোটের পর দুর্বল বিজেপি বছর দেড়েক বাংলায় বহিরাগত অনুপ্রবেশ ঘটাতে পারেনি। কিন্তু কয়েকটি ইস্যুতে অক্সিজেন পেয়ে আবার বর্গি দিয়ে বাংলা দখলের খেলা শুরু হয়েছে। আপনাদের এলাকায় নতুন ফ্ল্যাটগুলি কারা এসে কিনছেন, ভোটার তালিকায় কারা বাইরে থেকে এসে নাম তোলাচ্ছেন, সব তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে খেয়াল রাখুন। নাহলে প্রতি বছর পাড়ায়-পাড়ায় রিষড়া, পাড়ায়-পাড়ায় শিবপুর আর রোজ রাতে এমনই লাগামহীন কর্কশ ডিজের আওয়াজের নিয়মিত শ্রোতা হওয়ার প্রস্তুতি নিন।
বাংলার ভোটে ওরা জিতবে না। তাই ওদিক থেকে লোক আনতে হবে। ভোটার তালিকায় ব্যালেন্স করতে হবে.. তারই সুচতুর প্ল্যানিং চলছে গত ৪-৫ বছর যাবত.. খেয়াল রাখুন, নজর দিন।'
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)