সরকারি কাজের কাটমানি দিতে অস্বীকার করায় তৃণমূলের আদিবাসী মহিলা পঞ্চায়েত প্রধানকে মারধর, শ্লীলতাহানি ও জাতি বিদ্বেষমূলক গালাগালি দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল নেতাদেরই বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েত অফিসে প্রধানের কার্যালয়ে ঢুকে তাঁকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ প্রধানকে অভিযুক্তদের সঙ্গে মিটমাট করে নেওয়ার পরামর্শ দেয় বলে জানিয়েছেন নিগৃহীতা আদিবাসী রমণী। অবশেষে মঙ্গলবার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানালেন তিনি। এই ঘটনায় ফের একবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে আদিবাসী মহিলাকে নিগ্রহের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে চরম আতঙ্কে রয়েছেন তৃণমূলি পঞ্চায়েত প্রধান।
ঘটনা সেই দক্ষিণ দিনাজপুরের। যে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে বিজেপিতে যোগদান করায় ৩ আদিবাসী মহিলাকে নাকে খদ দিয়ে দলীয় কার্যালয়ে আসতে বাধ্য করেছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। সময়ের সঙ্গে সেসব থিতিয়ে গিয়েছে। তবে তৃণমূল নেতাদের আদিবাসী বিদ্বেষী মনোভাব জেলায় বদলায়নি বলে অভিযোগ বিরোধীদের। বুধবার ফের তার প্রমাণ মিলল জেলায়। এবার অভিযোগ করলেন গঙ্গারামপুর থানা এলাকার একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলি আদিবাসী মহিলা পঞ্চায়েত প্রধান।
পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়ে মহিলা আদিবাসী ওই পঞ্চায়েত প্রধান জানিয়েছেন, সোমবার পঞ্চায়েত দফতরে নিজের কাজে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। বেলা দেড়টা নাগাদ পঞ্চায়েতে তখন সরকারি কাজের টেন্ডার নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেই সময় পঞ্চায়েতে ঢুকে পড়ে বেশ কিছু দুষ্কৃতী। তারা আমার কাছে সরকারি কাজের কাটমানি দাবি করে। আমি কাটমানি দিতে অস্বীকার করলে প্রথমে সাঁওতাল জাতি তুলে গালিলাগাজ করতে থাকে তারা। এর পর তাঁর চুলের মুঠি ধরে মারধর করতে থাকে অভিযুক্তরা। এমনকী মারধর করার সময় তাঁর শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। প্রধানের আর্তচিৎকার শুনে তাঁকে উদ্ধার করেন পঞ্চায়েত দফতরের কর্মীরা।
ওই মহিলা প্রধান আরও জানিয়েছেন, ঘটনার কথা জানিয়ে তিনি গঙ্গারামপুর থানায় ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার বদলে আক্রান্ত মহিলা আদিবাসী পঞ্চায়েত প্রধানকেই মীমাংসা করার পরামর্শ দেন পুলিশ আধিকারিক। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে তিনি এতটাই আতঙ্কে রয়েছেন যে হাসপাতালে চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে যেতে পারেননি।
আক্রান্ত মহিলা আদিবাসী পঞ্চায়েত প্রধানের অভিযোগপত্রে নাম রয়েছে বইদুর রহমান, মহাবুর হোসেন, করম আলি, রফিকুল মিয়া, ওয়াজেদ আলি, এজার আলিসহ বেশ কয়েকজনের।
আক্রান্ত মহিলা আদিবাসী পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, রাস্তার কাজের ৫০ শতাংশ অর্থ তোলা হিসেবে দাবি করেছিলেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি ও চেয়ারম্যান। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলাজুড়ে। তবে এব্যাপারে মুখে কুলুপ তৃণমূল নেতৃত্বের।