শালিমারে ঢোকার আগে লাইনচ্যুত হয়ে গেল ডাউন সেকেন্দ্রাবাদ সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস। দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের তরফে জানানো হয়েছে, নলপুর স্টেশনের কাছে ২২৮৫০ ডাউন সেকেন্দ্রাবাদ-শালিমার সাপ্তাহিক সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের তিনটি কোচ লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছে। যে কামরাগুলি লাইনচ্যুত হয়েছে, তার মধ্যে একটি পার্সেল ভ্যান। বাকি দুটি কামরায় যাত্রীরা ছিলেন। তবে সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বড় কোনও চোট-আঘাতের খবর মেলেনি বলে দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের তরফে দাবি করা হয়েছে। সেই দুর্ঘটনার জেরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে।
কীভাবে দুর্ঘটনার মুখে পড়ল শালিমারগামী ট্রেন?
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ওমপ্রকাশ চরণ জানিয়েছেন, শনিবার ভোর ৫ টা ৩১ মিনিটে নলপুর স্টেশনে মাঝখানের লাইন থেকে ডাউন লাইনে যাওয়ার সময় ডাউন সেকেন্দ্রাবাদ-শালিমার সাপ্তাহিক সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের তিনটি কোচ লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছে। লাইন থেকে ছিটকে গিয়েছে একটি পার্সেল ভ্যান এবং সামনের দিকে থাকা দুটি কামরা। তবে এই দুর্ঘটনায় কারও বড়সড় কোন চোট লাগেনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভোর ৫ টা ৩০ মিনিট নাগাদ তাঁরা বিকট শব্দ শুনতে পান। দুর্ঘটনাস্থলে এসে তাঁরা দেখতে পান যে ট্রেনের তিনটি কামরা লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছে। যাত্রীরা জানিয়েছেন যে ভোরের দিকে আচমকা প্রবল ঝাঁকুনি অনুভব করেন। ট্রেনের গতি বেশি না থাকায় বড়সড় কোনও বিপদ হয়নি। গতি যদি বেশি থাকত, তাহলে কী হত, সেটা ভেবেই শিউরে উঠছেন যাত্রীরা।
তারইমধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক দাবি করেছেন, ইতিমধ্যে সাঁতরাগাছি থেকে খড়্গপুর থেকে দুর্ঘটনাস্থলে 'অ্যাক্সিডেন্ট রিলিফ ট্রেন' এবং 'মেডিক্যাল রিলিফ ট্রেন' পৌঁছে গিয়েছে। যাত্রীদের নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে ১০টি বাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। আপাতত লাইন মেরামতি করে পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক।
রেলের হেল্পডেস্ক নম্বর
১) খড়্গপুর: 63764
২) 032229-3764
প্রশ্নের মুখে রেল
সেই ঘটনায় বড় কোনও বিপদ না হলে আবারও রেলের পরিকাঠামো এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কীভাবে নলপুর স্টেশনে মাঝখানের লাইন থেকে ডাউন লাইনে চলে গেল ডাউন সেকেন্দ্রাবাদ-শালিমার সাপ্তাহিক সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রেলের তরফে অবশ্য আপাতত সেইসব বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। রেল সূত্রে খবর, এখন পরিষেবা স্বাভাবিক করার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। উচ্চপর্যায়ের তদন্ত করা হবে। তারপরই দুর্ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে।
আবারও দুর্ঘটনা
গত বছরে জুনে ওড়িশার করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা, চলতি বছরে জুলাইয়ে হাওড়া-মুম্বই মেলের দুর্ঘটনা, অক্টোবরে তামিলনাড়ুতে ট্রেন দুর্ঘটনার মতো একের পর এক যে বিপর্যয় ঘটছে, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে রেল।