সুন্দরবনের জঙ্গলে কতগুলি বাঘ রয়েছে? তা জানতে শুরু হয়ে গেল ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানোর কাজ। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে ক্যামেরা বসানো। আগামী ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গায় বাঘের সংখ্যা নির্ধারণের জন্য এই ক্যামেরা বসানো হবে। ৪৫ দিন ট্র্যাপ ক্যামেরা থাকবে সুন্দরবনে। এরপর সেগুলি তোলা হবে আগামী বছরের ৬ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারির মধ্যে। এর পাশাপাশি মাতলা রেঞ্জের অধীনে জঙ্গলেও ৪০ টি ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হবে।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বর মাস থেকে প্রত্যেক শুক্রবার পর্যটকদের জন্য সুন্দরবনের জঙ্গল বন্ধ, থাকবে ক্যামেরা
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা বন আধিকারক নিশা গোস্বামী জানান, এবছর ট্র্যাপ ক্যামেরার সংখ্যা গতবারের তুলনায় বাড়ানো হয়েছে। সুন্দরবনের চারটি রেঞ্জে প্রায় ১২০০ টির মতো ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হবে। এগুলি হল সজনেখালি, গোসাবা বাঘনা এবং বিদ্যা রেঞ্জ। প্রসঙ্গত, সুন্দরবনের বনাঞ্চল রয়েছে ১০৮১৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে। যার মধ্যে ভারতে রয়েছে ৪৭২৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা, অর্থাৎ ৩৮ শতাংশ ভারতের মধ্যে রয়েছে। বাকিটা রয়েছে বাংলাদেশে। ভারতের মধ্যে থাকা পুরো সুন্দরবন জঙ্গল জুড়েই এই ক্যামেরাগুলি বসানো হবে। কীভাবে ক্যামেরা লাগাতে হবে সেই প্রশিক্ষণ আগেই দেওয়া হয়েছে বনদফতরের কর্মীদের।
এছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনা বনবিভাগের অধীনে রায়দিঘী রেঞ্জ, রামগঙ্গা রেঞ্জে ১৪০ টি করে ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হবে। জঙ্গলে কোথায় বেশি বাঘ ঘোরাঘুরি করছে তা এই ক্যামেরার মাধ্যমে সহজেই রেকর্ড করা যাবে। বন আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, অনেক ক্ষেত্রেই ৩০ দিন ধরে কোনও এলাকায় বাঘ আসে না। সে কথা মাথায় রেখে ট্র্যাপ ক্যামেরা ৪৫ দিন ধরে বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে বাঘের গতিবিধি নজরে আসবে। এই ক্যামেরাগুলি অত্যাধুনিক এবং এগুলি স্বয়ংক্রিয়। এর ব্যাটারির মেয়াদ থাকবে ৪৫ দিন পর্যন্ত।
এদিকে, বাঘের গণনার কাজের জন্য আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল পর্যটকদের জন্য শুক্রবার করে বন্ধ থাকবে। তবে কাজটি হয়ে গেলে আর এই নিয়ম মানা হবে না। বন দফতর সূত্রে খবর, বাঘেদের যাতায়াত, দৌড়ে শিকার ধরা, শাবকদের নিয়ে মা বাঘের বিশ্রাম—সব ধরা পড়বে ক্যামেরায়। সঙ্গে উঠে আসতে পারে অনেক অজানা তথ্য। তবে এই ক্যামেরায় যে শুধু বাঘ ধরা পড়বে তা নয়, গতবারের মতো এবারও মেছো বিড়াল, বুনো শুকর-সহ অন্যান্য প্রাণীর ছবিও ধরা পড়বে বলে জানাচ্ছে বন বিভাগ।