একটি গাছ একটি প্রাণ। এই কথা প্রায়ই ছাত্রছাত্রীদের পড়িয়ে থাকেন শিক্ষক। কিন্তু সেই গাছেরই হলো এবার রহস্যজনক মৃত্যু। তাও আবার স্কুল প্রাঙ্গণে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ গাছের রহস্যজনক মৃত্যু বলে কথা! এমনকী পরিকল্পিত খুনের অভিযোগও উঠেছে। তার জেরে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক (প্রাথমিক বিভাগ)। সুতরাং বিষয়টি আর হালকা নেওয়ার জায়গায় নেই। এই অবাক করা কাণ্ড ঘটেছে বর্ধমানে। বর্ধমানের ঐতিহ্যশালী বিদ্যালয়ে গাছের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাজির হয়েছে পুলিশও।
বিদ্যালয় সূত্রে খবর, বর্ধমান পৌর উচ্চ–বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগের সামনে প্রায় পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে রয়েছে একটি শিরীষ গাছ। পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করে গাছের গোড়াটি বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যাতে সুন্দর লাগে। নিয়মিত পরিচর্যাও করা হতো। সম্প্রতি জড়া ধরতে শুরু করেছিল। আর গাছের সমস্ত পাতা শুকিয়ে ঝরে গিয়েছিল। লম্বা গাছটি কীভাবে শুকিয়ে গেল তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (প্রাথমিক) বিশ্বজিৎ পাল বলেন, ‘প্রাথমিক বিভাগের সামনে থাকা এই শিরীষ গাছটি ৪০ বছরেরও বেশি পুরনো। কয়েকদিন ধরেই গাছটির পাতা ধীরে ধীরে ঝরে যাচ্ছিল। এখন গাছটি শুকিয়ে গিয়েছে। কেন এমন ঘটনা ঘটছে, তা জানা উচিত বলে মনে হয়েছে। তাই বর্ধমান থানায় বিষয়টি জানানো হয়েছে। তদন্ত দাবি করছি আমরা।’
এই শিরীষ গাছের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিভাগের মধ্যে মতানৈক্য প্রকাশ্যে এসেছে। প্রাথমিক বিভাগের দায়ের করা অভিযোগের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় পালটা অভিযোগ করেন মাধ্যমিক বিভাগের প্রধান শিক্ষক শম্ভুনাথ চক্রবর্তী। তাঁর অভিযোগ, বিদ্যালয়ের ‘শতবর্ষ ভবন’ লাগোয়া যে গাছটি মারা যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে সেটি প্রাথমিক বিভাগের আওতাতে নয়। এই বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে কাজ করা উচিত ছিল। শতাব্দী প্রাচীন বিদ্যালয়ে পুলিশে আসায় বিদ্যালয়ের গরিমা নষ্ট হয়েছে।
আর প্রাথমিক বিভাগের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ পাল বলেন, ‘এই গাছটি বিদ্যালয়ের সম্পত্তি। আমি একটি বিভাগের প্রধান হিসেবে বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। গাছের রহস্যজনক মৃত্যুর কারণ নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। বিদ্যালয়ের গরিমা নষ্ট হওয়ায় যে বিষয়টি সামনে আসছে সেটি ঠিক নয়।’