ঝাড়খণ্ডের পাঞ্চেতে ড্যামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (ডিভিসি) দফতর ঘেরাও করে তীব্র বিক্ষোভে সরব হল তৃণমূল কংগ্রেস। বিক্ষোভে পশ্চিম বর্ধমান ও পুরুলিয়া জেলা থেকে আসা তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ঝাড়খণ্ড তৃণমূলের নেতারাও। রাজ্যের শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ হয়।
আরও পড়ুন: ‘কারও মৃত্যু হলেই দায় নিতে হবে ডিভিসিকে’, কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মলয় ঘটক
এই কর্মসূচিতে সরকারের শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক সরাসরি ডিভিসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে বলেন, একসময় দামোদরকে বাংলার দুঃখ বলা হতো। এখন ডিভিসির বাঁধ বাংলার চাষিদের সর্বনাশ করছে। প্রতি বছর পরিকল্পনা করে জল ছাড়ে, ফলে হাজার হাজার একর জমির ফসল ডুবে যায়। এটা আর সহ্য করা হবে না। ডিভিসিকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে মন্ত্রী জানান, রাজ্যকে না জানিয়ে অতিরিক্ত জলছাড়া হলে ভবিষ্যতে সমস্ত ক্ষয়ক্ষতির দায়ভার নিতে হবে ডিভিসিকেই। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি স্পষ্ট করেন, ঘেরাও করা হয়েছে, শনিবার প্রয়োজনে অফিস ঘেরাও করে বসে থাকা হবে। বাংলার ক্ষতি চলতে দিলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। স্থানীয় উদ্বেগও সামনে আনেন নেতৃত্ব।
বিক্ষোভে জামুড়িয়ার বিধায়ক হরেরাম সিংহ, আসানসোল পুরসভার ডেপুটি মেয়র ওয়াসিমুল হক, এবং পুরুলিয়ার তৃণমূল নেতা অমরচন্দ্র মাজিও উপস্থিত ছিলেন। অমরচন্দ্র মাজি অভিযোগ করেন, পাঞ্চেত জলাধারে ডিভিসি সোলার প্রজেক্ট করতে চাইছে। পুরো জলাধার জুড়ে প্যানেল বসালে হাজার হাজার মৎস্যজীবীর জীবিকা শেষ হয়ে যাবে। বিকল্প ব্যবস্থা না করে এই প্রকল্প চলতে দেওয়া হবে না। বিক্ষোভ শেষে তৃণমূল নেতৃত্ব ডিভিসি কর্তৃপক্ষের হাতে স্মারকলিপি তুলে দিয়ে জানিয়ে দেয়, দাবি না মানলে এবার কলকাতার ডিভিসি অফিস ঘেরাও করা হবে।
এদিকে, আন্দোলনের পরই ডিভিসি জলছাড়ের মাত্রা কমিয়ে আনে। মাইথন থেকে ৪ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ৮ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। তৃণমূলের দাবি, এই সামান্য পরিবর্তনেই প্রমাণ মেলে, চাপ না দিলে বাংলার কথা ভাবতেই চায় না ডিভিসি।