আরজি কর আবহের মধ্যেই জয়নগরে চতুর্থ চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। এবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে জয়নগর। সরব হয়েছে রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। এই ঘটনার পরেই দফায় দফায় বিক্ষোভ অবরোধ করছেন গ্রামবাসীরা। রবিবারও গ্রামবাসীরা বিচারের দাবিতে পথে নেমেছেন। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রীর এরকম পরিণতি যেন মেনে নিতে পারছেন না তার গৃহশিক্ষিকা। এদিন তিনিও বিচারের দাবিতে পথে নামেন। সেই আন্দোলন থেকেই দোষীদের কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নির্যাতিতার দিদিমণি।
আরও পড়ুন: 'RG করে পুলিশের অকর্মণ্যতার জন্যই ধর্ষকরা অনুপ্রাণিত হচ্ছে', তুলোধোনা বোসের
গত শুক্রবার টিউশন থেকে আর বাড়ি ফেরেনি ছাত্রীটি। পরে একটি ফাঁকা মাঠ থেকে নাবালিকার নিথর দেহ উদ্ধার হয়।দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। সেই ঘটনার পরেই সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কুলতলি। বিক্ষোভের পাশপাশি পথ অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। পুলিশ ক্যাম্পে চালানো হয়েছে ভাঙচুর। জয়নগর থানার পুলিশ ক্যাম্পে পুলিশ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এই ঘটনা ঘটল? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসীরা। তারা কার্যত হাতে লাঠি, ঝাঁটা নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছয়।
জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী শেষবার মহিষমারি হাটের একটি কোচিং সেন্টারে টিউশন পড়তে গিয়েছিল। সেখান থেকে বিকেল পাঁচটার সময় বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যায় সে। এই ঘটনার জন্য কোচিং সেন্টারের দিদিমণি সরাসরি পুলিশ প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেছেন, রাজ্যে মহিলাদের কোনও নিরাপত্তা নেই। যে বা যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তাদের অবিলম্বে ফাঁসি দিতে হবে বলে তিনি দাবি জানিয়েছেন।
এদিন পড়ুয়াদের নিয়ে বিচারের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন গৃহশিক্ষিকা। সেখানেই তিনি জানান, ছাত্রীটি কোচিং শেষে সেন্টার থেকে পড়া শেষ করে বেরিয়েছিল। পরের দিন সকালে তিনি জানতে পারেন এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে। গৃহশিক্ষিকা আরও জানান, ওই নাবালিকা অত্যন্ত মেধাবী ছিল। তার সঙ্গে যে এমন ঘটতে পারে তা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। এই ঘটনার জন্য দোষীদের অবিলম্বে কঠোরতম শাস্তির দাবি জানান তিনি। এদিন বিক্ষোভ মিছিল থেকেই গৃহশিক্ষিকা বলেছেন, ‘যে বা যারাই করে থাকুক তাদের ফাঁসি হোক এটাই আমি চাই।’ একই সঙ্গে এমন ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধেও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন গৃহশিক্ষিকা। তাঁর অভিযোগ, এই ঘটনার পরেই নির্যাতিতার পরিবারকে হয়রানি করেছে পুলিশ। একবার কুলতলি থানা, একবার জয়নগর থানায় তাদের ঘোরানো হয়েছে। পুলিশ ঠিকমতো পদক্ষেপ করেনি। পদক্ষেপ করলে হয়ত এরকম হতো না। শুধু তাই নয়, পুলিশ তার সঙ্গেও কোনওরকম ভাবে যোগাযোগ করেনি বলে তিনি অভিযোগ করেন।