তিনি ভাঙড়ের তরুণ বিধায়ক! সুবক্তা এবং শিক্ষিত। বিজেপিকে বাদ দিলে রাজ্য় বিধানসভায় বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের একমাত্র মুখ! এহেন নওশাদ সিদ্দিকী নাকি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছ থেকে বিধানসভার 'দু-চারটে আসন আদায় করে নেওয়ার প্ল্যান কষেছেন'! সংবাদমাধ্যমের কাছে এই দাবি করেছেন ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ত্বদা সিদ্দিকী!
এই প্রসঙ্গে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, গত কয়েক দিনের ঘটনাক্রমের নিরিখে ত্বহা সিদ্দিকী সরাসরি তোপ দেগেছেন নওশাদকে। তাঁর দাবি, 'নওশাদ সিদ্দিকীর কোনও ভ্যালু নেই! উনি যখন আইএসএফ গঠন করেছিলেন, তখন বাংলার মানুষ ওঁর সঙ্গে ছিল। (কিন্তু) এখন ওঁর কাছ থেকে মানুষ সরে আসছে!'
উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকেলে হঠাৎই সংবাদ শিরোনামে উঠে আসেন নওশাদ সিদ্দিকী। কারণ, ওই দিন বিকেলেই তাঁর সাদা এসইউভি ঢুকতে দেখা গিয়েছিল নবান্নে! পরে জানা যায়, নওশাদের এই নবান্ন যাত্রার উদ্দেশ্য ছিল - মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে বৈঠক!
সঙ্গে সঙ্গে জল্পনা শুরু হয়ে যায়, তাহলে কি এবার নওশাদও সেই তৃণমূল কংগ্রেসেই নাম লেখাচ্ছেন? এখনও পর্যন্ত অবশ্য কোনও পক্ষ তেমন কোনও দাবি বা ইঙ্গিত করেনি। বরং, নওশাদ জানিয়েছিলেন, যেহেতু তিনি বিরোধী শিবিরের বিধায়ক, তাই তাঁকে তাঁর এলাকায় উন্নয়নের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
নওশাদের অভিযোগ ছিল, তাঁর বিধায়ক তহবিলের টাকা বিভিন্ন খাতে মঞ্জুর করা হলেও পঞ্চায়েত স্তরে সেই অর্থ ফেলে রাখা হচ্ছে। এ নিয়ে অভিযোগ জানাতেই গত সোমবার প্রায় ২৫ মিনিট ধরেন নবান্নে মমতার সঙ্গে বৈঠক করেন নওশাদ। আর সেই বৈঠকের ঠিক আটদিনের মাথায়, সোমবার (১৭ মার্চ, ২০২৫) বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী ফুরফুরা শরিফ যাবেন বলে জানা গিয়েছে।
এ নিয়ে পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি অবশ্য জানান, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফুরফুরায় কেন আসছেন, তা তিনি নিজেই জানেন!'
আর সেই প্রেক্ষাপটেই নওশাদকে এক হাত নেন ত্বহা। বলেন, 'নওশাদ সিদ্দিকী যদি তৃণমূলে যায়, তাহলে শাসকদলের লস হবে! নওশাদ মমতাকে চমকে দিচ্ছে শুধু! ও চাইছে, তৃণমূলে যোগ দেব না, তবে দু-চারটে সিট যদি পাওয়া যায় - সেই চেষ্টাই করছে! তৃণমূলে যোগ না দিয়েই ওদের কাছ থেকে দু-চারটে সিট আদায় করতে চাইছে! এই প্ল্যানেই ও এগোচ্ছে বলে আমার মনে হয়। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত বুদ্ধিমতী মহিলা। তাই, যদি তিনি ওকে দু-চারটে সিট ছেড়েও দেন, তাতে নওশাদের লাভ হয়ে যাবে। আর যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিট না ছাড়েন, তাহলে এর আগে নওশাদ যা পেয়েছে, এবার তাও পাবেন না।'