শনিবার নৈহাটির শিবদাসপুরে রাতে তুমুল বোমাবাজি, গুলি চলেছিল। তাতে গুলি লেগে আহত হন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। আর রবিবার তাঁর মৃত্যুর খবর আসে গ্রামে। এই ঘটনার একদিনের মধ্যে কিনারা করল জেলা পুলিশ। নৈহাটির ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। অভিযুক্ত দু’জনকে রবিবার রাতে গ্রেফতার করে আমডাঙা থানার পুলিশ। এই দু’জনের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। কল্যাণী হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পরেও বাঁচানো যায়নি তৃণমূল কংগ্রেস নেতা জাকির হোসেনকে।
ঠিক কী ঘটেছিল নৈহাটিতে? স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার রাতে শিবদাসপুরে মোটরবাইকে করে কয়েকজন দুষ্কৃতী আসে। তারা এলোপাথারি বোমা, গুলি ছুড়তে থাকে। তার জেরে তৃণমূল কংগ্রেস নেতার শরীরে গুলি লাগে। তাঁর শরীরে তিনটি গুলি লেগেছিল। আর বোমার আঘাতে দু’জন আহত হন। তাঁদের সবাইকে কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। আজ, রবিবার সেখানেই মৃত্যু হয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা জাকির হোসেনের।
কাদের গ্রেফতার করল পুলিশ? পুলিশ সূত্রে খবর, নৈহাটির শুটআউটে যুক্ত থাকার অভিযোগে রবিবার আসিফুল রহমান ওরফে বাচ্চা এবং ফারুক হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই দু’জনের বয়স ১৮ বছর। ধৃত আসিফুল শিবদাসপুর গ্রামেরই বাসিন্দা। ফারুকের বাড়ি আমডাঙায়। ধৃত দু’জনের কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিবাদের জেরেই এই খুন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। আগেও একবার এই নিয়ে গণ্ডগোল দেখা দিয়েছিল জমিতে চাষ করা নিয়ে। তখন থানা পুলিশও হয়েছিল। কিন্তু শনিবার রাতে এক বন্ধুর সঙ্গে জাকির একটি চায়ের দোকানে বসেছিল। হঠাৎ সেখানে কয়েকজন দুষ্কৃতী আসে এবং গুলি চালিয়ে চম্পট দেয়।
কেমন করে গ্রেফতার করা হল? রবিবার রাতে গোপন সূত্রে খবর আসে পুলিশের কাছে। সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করে বারাসত জেলা পুলিশের এসডিপিও (হাবরা) রোহিত শেখ এবং আমডাঙা থানার আইসি অঞ্জনকুমার দত্তের নেতৃত্বে আমডাঙার প্রভাকরকাটির বাঁশবাগানে অভিযান চালানো হয়। আর অভিযান চালাতেই সেখানে গা–ঢাকা দেওয়া অবস্থায় দু’জন ধরা পড়ে। তাদের জেরা করতেই বিষয়টি বেরিয়ে আসে এবং আরও দুষ্কৃতীদের সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ছটপুজোর দিন জাকিরের মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়। ঘটনাস্থলে শিবদাসপুর থানার বিশাল পুলিশ দেখা যায়। এই এলাকায় দুষ্কৃতীদের ধরতে জোরালো আবেদন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযুক্তের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গুলিবিদ্ধ জাকির হোসেন এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী ও হাই মাদ্রাসা স্কুলের সভাপতি ছিলেন।