৬ বছর আগে দাদাকে খুন করে বাড়ির উঠোনে দেহ পুঁতে দেয় দু’ভাই। সে সময় কাকপক্ষীতেও টের পায়নি। এত দিন পর শুক্রবার শুধুমাত্র অনুশোচনার জেরে খুনের কথা স্বীকার করে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করল অভিযুক্ত দু’ভাই অপু শীল ও তপু শীল। দাদা নিপু শীলকে খুনের অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করেছে জগদ্দল থানার পুলিশ। উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরের কাউগাছি ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের আদর্শপল্লির ঘটনা।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, পারিবারিক বিবাদের জেরে ২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর দাদাকে হত্যা করে দু’জন। নিজেরাই সেই দাবি করলে দু’ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এক ভাই অপরাধ স্বীকারের পর আত্মসমর্পণ করে পুলিশকে জানিয়েছে যে সে অনুশোচনায় ভুগছেন। তাদের বাড়ির উঠোন থেকে একটি কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। আরও তদন্ত চলছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শীল পরিবারের ৩ ভাই তাঁদের বাবা–মার মৃত্যুর পর উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলে তাঁদের পৈতৃক ভিটেতে থাকতেন। মৃত বড়ভাই নিপু শীল পেশায় ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার আর অন্য দু’ভাই তখনও বেকার। তবে তিনজনই ছিলেন অবিবাহিত।
এক প্রতিবেশী জানান, নিপু পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী হলেও পিতৃসম্পত্তির দখলদারি নিয়ে তিন ভাইয়ের মধ্যে প্রতিনিয়ত ঝামেলা হত। হঠাৎ দেখি তারা সকলে ওই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে। একদিন বাড়ি পরিষ্কার করতে এসেছিল অপু। প্রতিবেশীদের তখন সে জানায়, যে তারা তিনভাইয়ের এক–একজন দিল্লি, পুনে, গোয়ার মতো এক–একটা শহরে গিয়ে বাস করতে শুরু করেছে।
এরই মধ্যে শুক্রবার হঠাৎ হাজির হয়ে অপু পুলিশকে জানায়, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সে এবং তপু মিলে দাদা নিপুকে খুন করে বাড়ির উঠোনে পুঁতে দেয়। প্রতিবেশীরা জানান, এ সব শুনে প্রথমে পুলিশ ভাবে যে অপু হয়তো মানসিকভাবে অসুস্থ। কারণ, ঘটনাটি ৬ বছর আগের। তার এত দিন পর কেন কেউ খুনের কথা স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করবে! কিন্তু পুলিশ তদন্ত শুরু করলে তারা প্রতিবেশীরা জানান যে তাঁরা বেশ কয়েক বছর ধরে নিপুকে দেখেননি। এর পরই পুলিশ অপুকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় এবং দেহ উদ্ধার করে।
শনিবার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, অভিযুক্তদের হেফাজতে নিয়ে প্রকৃত ঘটনার কথা জানার চেষ্টা চলছে। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এদিনই তাদের তোলা হবে আদালতে।