একদিন পর বিজেপি নেতা বাবু মাস্টারের ওপর হামলার ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই দু’জনকে জেরা করে আর কেউ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে কিনা তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। মিনাখাঁর একটি ইটভাটা থেকে এই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন বসিরহাটের এই ‘দাপুটে’ নেতা। শনিবার দলীয় কর্মসূচি সেরে বসিরহাট ফেরার পথে মিনাখাঁয় তাঁর গাড়িতে হামলা হয়। তার জেরে তাঁকে কলকাতার এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে। বিজেপি নেতার গাড়িটিরও ফরেন্সিক পরীক্ষা হবে। তবে বাবু মাস্টারের পক্ষ থেকে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বাবু মাস্টারের গাড়ির চালককে, যিনি এখনও আইসিইউ–তে ভর্তি। তবে পুলিশের মদতেই ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টারের উপর হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং।
পুলিশের কাছে দেওয়া চালকের বয়ান অনুযায়ী, গাড়ি যখন বামনপুকুর খ্রীষ্টানপাড়া মোড়ে এসে পৌঁছয় তখন দেখা যায় রাস্তার পাশে একটি ইটভাটা থেকে কয়েকজন বেরিয়ে আসছেন। চালকের দাবি তিনি ভেবেছিলেন, ইটভাটা থেকে পায়ে হেঁটে শ্রমিকরা রাস্তা পার হতে চাইছে। তাই দেখে চালক গাড়ির গতি ধীরে করে। তখনই দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। প্রাণে বাঁচতে কোনওরকমে গাড়ি নিয়ে এলাকা ছাড়েন চালক। তারপর ২ কিলোমিটার দূরে পৌঁছন হাড়োয়া থানার পুলিশ ফাঁড়িতে।
এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এবং খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠলেও, এই ঘটনায় তাঁর এবং দলের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন খাদ্যমন্ত্রী। উল্টে এই ঘটনাকে বিজেপির অন্তর্কলহ বলে দাবি করেন তিনি। পেশায় শিক্ষক ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টার আগে সিপিএম করতেন। ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে পালাবদলের পর সিপিএম নাম লেখান তৃণমূলে কংগ্রেসে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে হাসনাবাদ থেকে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন তিনি। এরপর গত ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেই বিজেপিতে যোগ দেন বাবু মাস্টার। বাবু মাস্টারের উপর হামলার প্রতিবাদে উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আহত বিজেপি নেতাকে ডায়াবেটিক ডায়েট দেওয়া হচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিকও দেওয়া হয়েছে। তাঁর বাঁ কান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্প্লিন্টার বের করার জন্য মঙ্গলবার অস্ত্রোপচার করা হতে পারে।