আজ, সোমবার বিকেলে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল লোকাল ট্রেন। লাইনে চওড়া ফাটল ছিল। তার উপর দিয়েই যাওয়ার কথা ছিল লোকাল ট্রেনের। কারণ সেখানে যে এমন ফাটল বিপদ আকার নিয়ে আছে সেটা কেউ জানত না। এমনকী রেলকেও এমন কোনও খবর দেওয়া হয়নি। আর এই লাইন দিয়ে যদি যেত লোকাল ট্রেনটি তাহলে সেটাই শিরোনাম খবর হতো। কারণ লাশের পর লাশ পড়ে থাকত। ভয়ঙ্কর রেল দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকত মানুষজন। যদিও সেটা দুই পড়ুয়ার জন্য ঘটেনি।
ঠিক কী ঘটেছে নলহাটিতে? স্থানীয় সূত্রে খবর, লক্ষ্মীপুর স্টেশন ছেড়ে তখন দ্রুতগতি নিয়ে চলছে রামপুরহাট–আজিমগঞ্জ লোকাল। তখনও কেউ জানেন না সামনে কোন বিপদ অপেক্ষা করছে। অথচ এই লোকাল ট্রেন লোহাপুর ঢোকার আগে লাইনে চওড়া ফাটল দেখতে পায় দুই কিশোর পড়ুয়া। আর তা দেখে তারা চমকে ওঠে। বুঝতে পারে সামনেই বড় বিপদ ঘটতে চলেছে। মৃত্যুমিছিল যে ঘটত তা একেবারে নিশ্চিত। তখন দুই কিশোর নিজেদের উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে নলহাটিতে লোকাল ট্রেনের বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচিয়ে দেয়।
কেমন করে বাঁচাল তারা? সোমবার বিকেলে রেলগেট দিয়ে ওপারে যাওয়ার সময় রেল লাইনে ফাটল দেখতে পায় দুই পড়ুয়া। এই দুই পড়ুয়া দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। সুতরাং রেল লাইনে ফাটল থাকলে কি ঘটতে পারে সেটা তারা ভাল মতোই জানে। তাই নলহাটির রেললাইনে ফাটল দেখতে পেযে সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা খবর দেয় রেলের গার্ডকে। আর রেল লাইনে লাল কাপড় লাগিয়ে দিয়ে বিপদের সংকেত দিতে থাকে। এই গোটা পরিস্থিতি দেখে দাঁড়িয়ে যায় রামপুরহাট থেকে আজিমগঞ্জগামী লোকাল ট্রেনটি। লোকাল ট্রেন দাঁড়ানো অবস্থায় রুদ্ধশ্বাস গতিতে চলে রেললাইন মেরামতির কাজ। টানা আধঘণ্টা সময় ধরে লোকাল ট্রেনকে দাঁড় করিয়ে রেখে সারানো হয় রেললাইন। দুই ছাত্রের উপস্থিত বুদ্ধিতে প্রশংসায় ভরিয়ে রেল।
আর কী জানা যাচ্ছে? রেল সূত্রে খবর, ওই দুই কিশোরের নাম জয়রাম মাল (১৮) এবং গৌরব মাল (১৮)। এই দু’জনের বাড়ি তৈহার গ্রামে। তাঁরা দুই বন্ধু খেলতে বেরিয়েছিল। তারা দ্বাদশ শ্রেণিতে লোহাপুর এমআরএম হাইস্কুলের ছাত্র। কিন্তু খেলতে যাওয়ার সময়ই রেললাইনে ফাটল তাদের নজরে আসে। আর সতর্ক করে রেলকে। এই বিষয়ে লোহাপুর স্টেশন ম্যানেজার সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘লোহাপুর ঢোকার মুখে ১০ নম্বর গেটের কাছে ০৩০৭৯ নম্বরের ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যায়। দুই ছাত্রের উপস্থিত বুদ্ধিতে বড় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। এখন স্বাভাবিক হয়েছে রেল চলাচল।’