পার্টি অফিস কার? এই একটি প্রশ্নে দুই তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলরের লড়াইয়ে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল উত্তর ২৪ পরগণার পানিহাটি। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, সামাল দিতে নামতে হল পুলিশকে। আর পার্টি অফিসে তালা ঝোলালেন উপপুরপ্রধান। এই পার্টি অফিস দখলকে কেন্দ্র করেই দুই তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলরের বিবাদে উত্তপ্ত হয় এলাকা। এমনকী বিবাদ থেকে সংঘর্ষের চেহারা নেয় সোমবার রাতে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে দু’পক্ষের চারজন। পানিহাটির মহেন্দ্রনগর এলাকার এই ঘটনায় ঘটনাস্থলে যায় ঘোলা থানার পুলিশ। একজন কাউন্সিলর টুলু রানি দাস এবং অন্যজন স্বপন কুণ্ডু।
ঠিক কী ঘটেছে পানিহাটিতে? বিবাদের সূত্রপাত বহুদিন আগেই। পানিহাটি পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ড গত পুরসভা নির্বাচনে মহিলা প্রার্থীর জন্য সরক্ষিত হয়। তাই ২০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর টুলু রানি দাসকে ২১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী করা হয়। আর ২১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সরিয়ে ২০ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী করা হয় স্বপন কুণ্ডুকে। দু’জনেই নির্বাচনে জয়ী হন। আর তারপর থেকেই শুরু হয় বিপত্তি। এই একটি পার্টি অফিসের দাবিদার দুই। সুতরাং কে বসবেন সেখানে? তাই নিয়ে সম্মুখ সমরে পানিহাটি পুরসভার দুই তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপন কুণ্ডু–টুলু দাস। এই দুই কাউন্সিলরের বচসা, হাতাহাতিতে রণক্ষেত্র হয় পানিহাটি।
আর কী জানা যাচ্ছে? টুলু দাস যখন ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন, তখন তিনি ওই ওয়ার্ডের মহেন্দ্রনগরের পার্টি অফিসে বসতেন। গত পুরসভা নির্বাচনে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হন স্বপন কুণ্ডু। সুতরাং এখন এই পার্টি অফিসে তাঁর বসার কথা। আর টুলু দাসের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের পার্টি অফিসে বসার কথা। কিন্তু এই যুক্তি মানতে রাজি নন টুলু দাস। আর জায়গা ছাড়তে রাজি নন স্বপন কুণ্ডু। এলাকার পার্টি অফিসের দখল নিয়ে দুই কাউন্সিলরের মধ্যে বচসা লেগেই থাকত। সোমবার রাতে সেটাই চরম আকার নেয়।
কার ঠিক কী অভিযোগ? এই ঘটনার পর ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বপন কুণ্ডুর অভিযোগ, তিনি তাঁর ওয়ার্ডের পার্টি অফিস দীর্ঘদিন ধরে খুলতে পারছেন না। ফলে মানুষকে পরিষেবা দিতে অসুবিধা হচ্ছে। সোমবার সেই পার্টি অফিস খুলতে গেলে বাধা দেওয়া হয়। এমনকী ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর টুলু রানি দাস, তাঁর দলবল নিয়ে এসে হামলা চালায়। অস্থায়ী পার্টি অফিসে ভাঙচুর করেন। এই অভিযোগের পাল্টা কাউন্সিলর টুলু রানি দাসের অভিযোগ, কাউন্সিলর স্বপন কুণ্ডু তাঁর দলবল নিয়ে এসে হামলা চালায়। এই সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের মোট চারজন আহত হয়েছেন।