ফের তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল দক্ষিণ দিনাজপুর। মঙ্গলবার গঙ্গারামপুরে তৃণমূলের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে দুই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা–কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। যদিও দলীয় কোন্দলের কথা স্বীকার করতে নারাজ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, এই সংঘর্ষের পেছনে অন্য রাজনৈতিক দলের হাত রয়েছে।
এক মৃতের নাম কালিপদ সরকার। এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলা তৃণমূলের অন্দরে। যদিও পুলিশের দাবি, হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে কালিপদ সরকারের। সবমিলিয়ে তাঁর মৃত্যুর কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা ছড়িয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন কালিপদ সরকার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকা দখল নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াই ছিল বহুদিনের। বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসতেই ফের সেই দ্বন্দ্ব সামনে এসেছে। গঙ্গারামপুরের শুকদেবপুর এলাকায় কার প্রভাব থাকবে, তা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে অশান্তি বাঁধে। এক গোষ্ঠীর সদস্যরা অপর গোষ্ঠীর উপর চড়াও হয়। ব্যাপক মারধর, বাড়িতে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি গুলি চালানোরও অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল নেতাকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে দলেরই সদস্যদের বিরুদ্ধে। আর এক তৃণমূল কর্মীও গুলিবিদ্ধ হন। মালদহের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
এদিকে গুলির লড়াইয়ের পাশাপাশি দু’পক্ষের মধ্যে মারপিটও হয়। তাতেই কালিপদ সরকার জখম হন বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে চিকিৎসার জন্য গঙ্গারামপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মালদহ হাসপাতালে মৃত্যু হয় গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মী সন্দীপ সরকারেরও। এরপর সুমন রায় নামে এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
অন্যদিকে ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স। তৃণমূলের অন্দরে, কালিপদ সরকার বিপ্লব অনুগামী বলেই পরিচিত ছিলেন। ঘটনার তদন্তে নেমেছে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সভাপতি গৌতম দাস জানান, ‘কীভাবে কালীপদ সরকারের মৃত্যু হয়েছে, তা জানি না। তবে তৃণমূল কর্মী সন্দীপ সরকারকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয়েছে।’