অমানবিক বললে বোধহয় কম বলা হবে। যেভাবে ৯ জন কুকুর ছানাকে প্রাণে মারা হল তা প্রকাশ্যে আসতে শিউরে উঠলেন মানুষজন। এতটা নির্মম, নিষ্ঠুর হওয়া যায়? এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে। উলুবেড়িয়ার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বাহিরতফা গ্রামে এখন এটাই চর্চিত বিষয়। ৯ জন কুকুর ছানাকে এখানে জলে ডুবিয়ে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ এক দম্পতির বিরুদ্ধে। এই ঘটনা নিয়ে এখন থানা–পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে। সেখানে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে ওই দম্পতির বিরুদ্ধে। তবে ওই দম্পতি এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা ফুঁসছেন। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কী ছিল কুকুরদের অপরাধ? স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই দম্পতির ঘরের মধ্যে সন্তান প্রসব করে কুকুররা। এই অপরাধে ৯টি কুকুর ছানাকে পুকুরে ডুবিয়ে মেরেছে ওই দম্পতি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ে উলুবেড়িয়া পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে বাহিরতফা গ্রামে। আর তা নিয়ে গ্রামবাসীরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। পুলিশের কাছে তাঁরা এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত দাবি করেছেন। এমনকী দোষীর উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছেন। ইতিমধ্যেই গ্রামবাসীদের কথা শুনে পুলিশ অভিযোগ দায়ের করেছে।
আরও পড়ুন: আরজি কর হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু, স্বাস্থ্যভবনকে তদন্তের নির্দেশ দিলেন মেয়র
কারা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত? গ্রামবাসীদের কথা অনুযায়ী, গনেশ মণ্ডল এবং জগবন্ধু মণ্ডলের বাড়ির মধ্যে একটি সারমেয় ৯টি বাচ্চা প্রসব করে। এই খবর স্থানীয়দের কানে ছিল। আর এটা নিয়ে বেশ বিরক্ত ছিলেন গণেশ–জগবন্ধুর পরিবার। সেটাও সকলে জানত। গত বৃহস্পতিবার বেশি রাতে বাড়ির মালিক একটি বস্তার মধ্যে কুকুরের বাচ্চাগুলিকে ভর্তি করে বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে একটি পুকুরের মধ্যে ফেলে দেয়। এই খবর চাউর হয়ে যায়। তারপরই শুক্রবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায় স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ, শনিবার সকালে কুকুরের বাচ্চাগুলি পুকুরে ভেসে ওঠে। তখনই স্থানীয় মানুষজন অভিযুক্তর বাড়িতে বিক্ষোভ দেখায়।
আর কী জানা যাচ্ছে? স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাবে বুঝতে পেরে অভিযুক্ত জগবন্ধু ও গণেশ এলাকা ছেড়ে চম্পট দিয়েছে। এখন পুলিশ তাদের খুঁজছে। কারণ এই ঘটনায় গ্রামবাসীরা ফুঁসছেন। এই ঘটনার বিষয়ে পলাতক গণেশের স্ত্রী দেবশ্রী মণ্ডল সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। আর বলেন, ‘কুকুরটি কখন আমাদের ঘরের মধ্যে ঢুকে গিয়েছিল সেটা জানি না। আমরা একটি ঘরের মধ্যে বাস করি। তাই কুকুরের বাচ্চাগুলিকে রাস্তার ধারে রেখে আসা হয়েছিল। কোনও কুকুর ছানাকে পুকুরে ফেলা হয়নি। গ্রামের মানুষজন সকলে মিথ্যা অভিযোগ করে ফাঁসাচ্ছে।’