কলকাতার দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই এবার দুর্গাপুজোকে নিয়ে বাড়তি চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। কিন্তু ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদল এখন রাজ্যে ঘুরে নানা বিষয় দেখছেন। বাংলার সংস্কৃতি–কৃষ্টি দেখছেন তাঁরা। এবার তাঁরা দেখলেন পিংলার পটচিত্র। আর দেখে এতটাই মুগ্ধ হলেন যে বলে ফেললেন, ‘ওয়াও’... .! ইউনেস্কোর প্রতিনিধি দলের এই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া আশার আলো জাগিয়েছে। আবার সবংয়ের মসলন্দের মাদুর দেখে মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার কাছে বারবার জানতে চাইলেন, ‘সত্যিই এগুলি হাতে বোনা?’
ঠিক কী ঘটেছে পিংলা–সবংয়ে? শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলার নয়া গ্রাম এবং সবংয়ের সারতা গ্রামে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদল। সেখানে ছিলেন জন সিবেস্তিয়ান কার্টিস। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক আয়েশা রানি এ, অতিরিক্ত জেলা শাসক (ভূমিদপ্তর) সুমন সৌরভ মোহান্তি, জেলার ক্ষুদ্র ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরের অধিকর্তা দেবব্রত রায়, মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া–সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। গ্রামের সাধারণ মাটির বাড়ির নিকোনো দেওয়ালেও রয়েছে শিল্পের ছোঁয়া। যা দেখে রীতিমতো অভিভূত ইউনেস্কোর সদস্যরা।
আর কী দেখলেন তাঁরা? ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদের শিল্পীরা তাঁদের আঁকা পট ও অন্যান্য শিল্প সামগ্রীর পসার সাজিয়ে দেখালেন। ৯/১১–তে নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে কী ঘটেছিল, তা পটচিত্রে তুলে ধরেছিলেন শিল্পী স্বর্ণ চিত্রকর। যা দেখে রীতিমতো বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন কার্টিস। শিল্পীদের কাছে কার্টিস জানতে চাইলেন, একটি ছবি আঁকতে কতদিন সময় লেগেছে? কোথা থেকে শিখলেন ছবি আঁকা? উত্তরে শিল্পীরা জানান, এই শিল্পকর্ম তাঁদের বংশপরম্পরা ধরে চলে আসা। বাপ–ঠাকুরদার কাছ থেকেই আঁকা শিখেছেন। আর তা দেখে কার্টিস বলেন, ‘আপনাদের আঁকা ছবি দেখে আমরা অভিভূত। আপনাদের সঙ্গে সময় কাটাতে পেরে আমরা খুব খুশি।’
তাহলে আবার স্বীকৃতি মিলবে? পটশিল্প এবং মাদুরশিল্প সত্যিই যদি হেরিটেজ তকমা পায়, তা হলে বাংলার শিল্প ঐতিহ্যের মুকুটে যোগ হবে নতুন পালক। এই বিষয়ে কার্টিস বলেন, ‘এটি খুব দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। অনেক কিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হয় আমাদের। তবে এটা বলতে পারি, এই দুটি শিল্পই উৎকৃষ্ট মানের। স্বীকৃতি পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।’ আর মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন,‘ইউনেস্কোর প্রতিনিধি দলকে কাছে পেয়ে আমরাও আনন্দিত। দু’টি শিল্পের প্রসার ঘটানোই আমাদের সরকারের প্রধান লক্ষ্য।’