বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার ২ জন। এই ঘটনায় মোট আটজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। এই গ্রেফতারি নিয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সমীর আহমেদ বলেন, 'দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।' অবশ্য ধৃতদের পরিচয় প্রাথমিক ভাবে জানায়নি পুলিশ। তবে পরে নিউজ ১৮-এর রিপোর্টে জানা যায়, খগেন হামলায় দুই হামলাকারীর নাম আক্রামুল হক এবং গোবিন্দ সরণ। এদিকে ধৃতরা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত কি না, সেই বিষয়েও কোনও তথ্য দেয়নি পুলিশ।
উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের ওপর হামলা হয়েছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর নাগরকাটায় এলাকা পরিদর্শন এবং ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়েছিলেন মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন এবং শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর। শঙ্কর ঘোষকে চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁর হাতে চোট লেগেছিল। তবে খগেন মুর্মুর চোখের নীচের হাড় ভেঙে গিয়েছে। তাঁর ভাঙা হাড়ের এক্স-রে রিপোর্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এই আবহে খগেনকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু, সুকান্ত মজুমদাররা। এদিকে সাংসদের ওপর হামলায় ইতিমধ্যেই পুরো ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।
এদিকে এই ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। বিজেপি একদিকে আঙুল তুলেছে তৃণমূলের দিকে। অপরদিকে তৃণমূলের দাবি ছিল, সাধারণ মানুষই ক্ষুব্ধ হয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে এই হামলার নিন্দা জানায় তৃণমূল। খগেনকে দেখে মুখ্যমন্ত্রী আবার বলেছিলেন, 'এমনি ঠিক আছেন। সিরিয়াস কিছু নয়। যাঁদের ডায়াবেটিস থাকে, তাঁদের একটু পর্যবেক্ষণে বেশি রাখতে হয়। ডায়াবিটিস কন্ট্রোল করতে হয়। ওঁর একটু কানে বেশি লেগেছে। চিকিৎসকদের রিপোর্ট ইত্যাদি আমি দেখেছি। উনি এখন পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। ওঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছি।' এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, আপাতত খগেন মুর্মুর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও, রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকায় এখনই অস্ত্রোপচার করা সম্ভব নয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অন্তত ছয় সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হতে পারে প্রবীণ সাংসদকে।
এদিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে শঙ্কর ঘোষ দাবি করেছিলেন, নাগরাকাটায় তাঁরা ত্রাণ দিতে গিয়েছিলেন। প্রথমে কোনও সমস্যা হয়নি। তবে হঠাৎ কিছু লোক ‘দিদি-দিদি’ বলে তেড়ে আসে, তারপরই আক্রমণ করে। পুলিশ তখন দাঁড়িয়ে দেখছিল। এই পরিস্থিতিতে খগেনের ওপর হামলার আঁচ গিয়ে পড়ে ত্রিপুরায়। সেখানে তৃণমূলের পার্টি অফিসের ওপর হামলা হয়। সেখানে আবার তৃণমূল প্রতিনিধি দল পাঠায়। তাদের নাকি পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় আগরতলা বিমানবন্দরে।