বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > অন্যান্য জেলা > অমর্ত্য সেনের চিঠির জবাব দিলেন উপাচার্য, পরস্পরের পত্রবোমায় তপ্ত বিশ্বভারতী

অমর্ত্য সেনের চিঠির জবাব দিলেন উপাচার্য, পরস্পরের পত্রবোমায় তপ্ত বিশ্বভারতী

অমর্ত্য সেনের সমর্থনে মিছিল (PTI)

রাজ্য সরকারকে জমি মেপে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। বিশ্বভারতীর জমি পুনরুদ্ধারই একমাত্র লক্ষ্য। নিশ্চয়ই অমর্ত্য সেনের সমর্থনও পাব আমরা।

প্রতীচী বিতর্কে নয়া মোড়। অমর্ত্য সেনের আইনি চিঠির জবাব দিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ওই চিঠিতে জমি বিতর্কে উপাচার্য লিখেছেন, ‘‌বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের পথ খুঁজতে গিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সময় ব্যয় করেছি। রাজ্য সরকারকে জমি মেপে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। বিশ্বভারতীর জমি পুনরুদ্ধারই একমাত্র লক্ষ্য। নিশ্চয়ই অমর্ত্য সেনের সমর্থনও পাব আমরা।’‌

সম্প্রতি অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের বাড়ি ‘প্রতীচী’ নিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে, ওই বাড়ির খানিকটা অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি। অমর্ত্য সেনের পরিবার বেআইনিভাবে তা দখল করে বাড়ি বানিয়েছে। শান্তিনিকেতনে প্রতীচীর জমি বিতর্ক নিয়ে এখনও চলছে জোর শোরগোল। অর্মত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

চিঠিতে অতিরিক্ত জমি প্রসঙ্গে উপাচার্যকে অমর্ত্য সেন লিখেছেন, ১৯৪০ সালে বিশ্বভারতীর কাছ থেকে জমি দীর্ঘমেয়াদি লিজে নিয়েছিলেন আমার বাবা। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অশোক মাহাতো হুমকি দিয়েছেন, আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ৮০ বছরের পুরনো নথির অপব্যবহারের উদ্দেশ্য স্পষ্টত হয়রানি করা। আমি ওই জমির জন্য প্রতি বছর খাজনা এবং পঞ্চায়েত করও দিই।

উপাচার্য চিঠিতে লিখেছেন, জুন বা জুলাই মাসে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে অরবিন্দ নামের জনৈক ব্যক্তি ফোন করেন। ফোনে বলা হয়, অধ্যাপক অমর্ত্য সেন তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান। এই উন্নত প্রযুক্তির যুগে কে কাকে ফোন করেছিলেন, কখন করেছিলেন, অধ্যাপক সেন উপাচার্যকে আদৌ ফোন করেছিলেন কি না, তা যথাযথ টেলিকম কর্তৃপক্ষের কাছে গেলেই জানা যায়। এভাবেই তর্কের মীমাংসা হতে পারে। অধ্যাপক সেনের উষ্মার কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।

অধ্যাপক অমর্ত্য সেন চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘‌দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও বিশ্বভারতী গত সাত দশক ধরে লিজ বহির্ভূত অতিরিক্ত জমি ফেরত নেওয়ার জন্য আশুতোষ সেনকে কোনও নোটিস দেয়নি। ২০০৬ সালে জমি মিউটেশনের জন্য বিশ্বভারতীর কাছে আবেদন করলেও কোনও অতিরিক্ত জমির কথাও বলেনি। ৮০ বছরের পুরনো নথির অপব্যবহার করা হয়েছে।’‌ এবার তারই পাল্টা চিঠি দিয়েছেন উপাচার্য।

এই জমি সংক্রান্ত বিষয়ে উপাচার্য জানিয়েছেন, বিশ্বভারতীর ১১৩৮ একর জমির মধ্যে ৭৭ একর ইতিমধ্যেই বেআইনিভাবে দখল হয়ে গিয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর সহকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে অমর্ত্য সেনের সঙ্গে ফোনালাপ ও জমির দখলদারি নিয়ে কথা বলেছিলেন। তা সিসিএস রুল ১৯৬৪ অনুযায়ী, ভেতরের কথা বাইরে বলা নিষেধ। বিশ্বভারতীর সব কর্মী মেনে চলতে বাধ্য। অধ্যাপক সেন নিশ্চিত থাকতে পারেন, বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে অপদস্থ করতে চায় না বা তাঁর পৈতৃক সম্পত্তির উত্তরাধিকার খর্ব করতে চায় না। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হল বিশ্বভারতীর ন্যায্য জমি পুনরুদ্ধার করা যাতে নিশ্চয়ই অধ্যাপক সেনের সমর্থন আমরা পাব।

বন্ধ করুন