শুক্রবার সন্ধ্যায় টিউশন থেকে ফেরার পথে নাবালিকাকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রতিবেশী এক যুবক হাত পা বেঁধে ধর্ষণ করে। তারপরেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে নাবালিকা। উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার সেই ঘটনায় ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু, তারপরেও আতঙ্কে রয়েছে নাবালিকার পরিবার। তাদের অভিযোগ, অভিযুক্ত যুবকের পিসি প্রভাবশালী তৃণমূল নেত্রী। তার কাকা পুলিশকর্মী। সরাসরি না হলেও এই ঘটনায় পরোক্ষভাবে তাদের ভয় দেখানো হচ্ছে। এদিকে, ঘটনার পরেই শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করেছে।নির্যাতিতা সেই ঘটনার পর মানসিকভাবে নিজেকে সামলে এখন নিজেকে পড়াশোনায় ব্যস্ত রাখতে চায়ছে।
আরও পড়ুন: টিউশন থেকে ফেরার পথে কিশোরীকে বেঁধে ধর্ষণ, লজ্জায় আত্মহত্যার চেষ্টা, ধৃত যুবক
জানা গিয়েছে, সোমবার নির্যাতিতা বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দিয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে ভালো ফল করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। তবে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে নির্যাতিতার পরিবার। তার বাবার কথায়, অভিযুক্ত যুবকের পিসি হলেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপ প্রধান। বর্তমানে তিনি তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের জেলা সহ-সভাপতি। আর তার কাকা পুলিশে রয়েছেন। ফলে প্রভাব খাটিয়ে পরোক্ষভাবে ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
স্থানীয়দের দাবি, ওই যুবক বাইক নিয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায়। আরও অনেক মেয়েকে উত্যক্ত করে বেড়ায়। বিজেপির অভিযোগ, পিসির প্রভাবে যুবক দাপিয়ে বেড়াতো। শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকায় এতদিন কেউ সাহস পায়নি মুখ খোলার। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত যুবকের পিসি। তিনি জানান, ভাইপোকে ধরিয়ে দিতে তিনি পুলিশকে সাহায্য করেছেন। তাছাড়া নির্যাতিতার পরিবারকেও সব রকমের আইনি সাহায্য দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিকে, এই ঘটনার পরে সোমবার শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধিরা নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করেন। তদন্তে যাতে কোনও গাফিলতি না থাকে সেজন্য জেলার পুলিশ সুপার এবং জেলা শাসকের চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবক জেরায় ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। সে জানিয়েছে ভুল করে ফেলেছে। এখন তার মোবাইলের কল লিস্ট খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই এলাকায় পুলিশের টহল চলছে। পাশাপাশি পুলিশ পিকেট বসানো হবে। তবে এই ঘটনার পর থেকে এলাকার অন্যান্য নাবালিকা ও কিশোরীরা আতঙ্কে রয়েছেন। তারা সন্ধ্যার পর একা টিউশনে যেতে ভয় পাচ্ছে।