দু’দিন আগেই তেভাগা আন্দোলনের শহিদ পরিবারের সদস্য ছাপিয়ে কোলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করে ৬ দিনের মাথায় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেয়েছিলেন। এই ঘটনা দেখে অনেকেই মনে করতে শুরু করেছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানালে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব। তিনি এযুগের মুশকিল আসান। তাই এবার তৃণমূল কংগ্রেস –এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের গাড়ি ঘিরে ধরলেন গ্রামবাসীরা। আর জানালেন, পানীয় জল ও নিকাশির সমস্যা রয়েছে। এগুলির সমাধান করে দিন। রামপুরহাট শহরের চামড়াগুদাম এলাকার মহিলাদের এই দাবি তাঁরা এভাবেই শোনালেন। আর অভিষেকও শুনলেন মন দিয়ে।
ঠিক কী বললেন মহিলারা? এখন তৃণমূলে নব জোয়ার কর্মসূচি নিয়ে মঙ্গলবার বীরভূমে এসেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তখনই মাড়গ্রামের পথে চামড়াগুদামে স্থানীয় মহিলারা তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরেন। গাড়ি থামিয়ে মহিলাদের দিকে এগিয়ে যান অভিষেক নিজেই। তখন এলাকার মহিলারা সমবেত হয়ে বলেন, ‘আমাদের এলাকায় রাস্তা নেই। টাইম কল নেই। এমনকী জল নিকাশি ব্যবস্থা নেই। এলাকার বিধায়ককে জানিয়ে কিছু লাভ হয়নি। তাই আপনার কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি।’ অভিষেক তখন মহিলাদের দাবিগুলি তাঁর আপ্ত সহায়ককে ডায়েরিতে লিখতে বলেন। সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে বলে আশ্বাস দেন।
এদিকে মুর্শিদাবাদ থেকে বীরভূমে আসেন অভিষেক। এখন এই জেলা অনু্রতহীন। এখানে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত হন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ শতাব্দী রায় মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী ছাড়াও অন্যান্য জেলার নেতারা। এখানে এসে একশো দিনের কাজ এবং আবাস যোজনার টাকা আটকানো নিয়ে কেন্দ্রকে তুলোধনা করেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘২০২১ সালে বাংলায় হেরে যাওয়ায় একশো দিনের কাজের টাকা দু’বছর ধরে আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আবাস যোজনার টাকাও আটকে রেখেছে। বীরভূম জেলায় প্রায় ১৪ লক্ষ লোক রয়েছেন, যাঁদের জীবিকা ১০০ দিনের কাজের উপরে নির্ভর করে। ৮৪ হাজার লোক তাঁদের প্রাপ্য টাকা এখনও পায়নি।’
আর কী জানা যাচ্ছে? এই জেলায় নতুন কোর কমিটি গড়েছেন খোদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী এই জেলা তিনি নিজে দেখবেন বলে আগেই ঘোষণা করেছিলেন। সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসায় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–কর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার উপর বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। বিজেপি এখন এই জেলাকে টার্গেট করেছে। তাই অমিত শাহকে নিয়ে এসে সভা করানো হয়েছিল। সেখানে বীরভূমে ঘাসফুলের সংগঠন কোন জায়গায় আছে সেটা সরেজমিনে দেখে নিতে চাইছেন অভিষেক।